নয়া দিল্লি: রাত পোহালেই সাধারণতন্ত্র দিবস। তার প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার রাতে এবছরের পদ্ম পুরস্কার প্রাপকদের নাম ঘোষণা করল কেন্দ্র। এবারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা ৩৪ জন ব্যক্তিত্বকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। যার মধ্যে বাংলার ৪ জন, দেশের প্রথম মহিলা মাহুত পার্বতী বড়ুয়া-সহ জাগেশ্বর যাদব, চার্মি মুর্মু, সোমান্না, সর্বেশ্বর, সাংথামের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। তালিকায় কে কে রয়েছেন দেখে নেওয়া যাক একনজরে
১) পার্বতী বড়ুয়া- অসমের বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সি পার্বতী বড়ুয়া দেশের প্রথম মহিলা মাহুত। প্রাণী কল্যাণে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে।
২) জাগেশ্বর যাদব- ছত্তিশগঢ়ের বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সি জাগেশ্বর যাদব উপজাতিদের কল্যাণে তাঁর জীবন নিয়োজিত করেছিলেন।
৩) চামি মুর্মু- ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা ৫২ বছর বয়সি চার্মি পরিবেশ রক্ষায় এবং মহিলাদের স্বনির্ভরতার লক্ষে বিশেষ কাজ করেছেন।
৪) গুরবিন্দর সিং- হরিয়ানার বাসিন্দা ৫৩ বছর বয়সি গুরবিন্দর বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন, অনাথ, গৃহহীনদের জন্য বিশেষ কাজ করেছেন।
৫) সত্য নারায়ণ বালেরি- কেরলের বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সি সত্যনারায়ণ কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
৬) দুখু মাঝি- পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ৭৮ বছর বয়সি দুখু মাঝি পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ অবদান রেখেছেন। তিনি গাছ দাদু হিসাবে পরিচিত।
৭) কে চেল্লামাল- আন্দামান ও নিকোবরের বাসিন্দা ৬৯ বছর বয়সি চেল্লামাল অর্গানিক কৃষিকাজে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
৮) সংগাথাঙ্কিমা- মিজোরামের বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি এই ব্যক্তি অনাথ শিশুদের জন্য অনেক কাজ করেছেন। মিজোরামে বৃহত্তম অনাথ আশ্রম চালান তিনি।
৯) হেম চন্দ্র মাঝি- ছত্তিশগঢ়ের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সি হেমচন্দ্র ৫ দশকের বেশি সময় ধরে দরিদ্র গ্রামবাসীর চিকিৎসায় বিশেষ অবদান রেখেছেন। ১৫ বছর বয়স থেকে তিনি দরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন।
১০) ইয়ানুং জামোহ লেগো- অরুণাচল প্রদেশের ৫৮ বছর বয়সি এই ব্যক্তি কৃষিকাজে বিশেষ অবদানের জন্য পদ্ম পুরস্কার পাচ্ছেন।
১১) সোমান্না- কর্ণাটকের বাসিন্দা ৬৬ বছর বয়সি সোমান্না ৪ দশক ধরে উপজাতিদের উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন।
১২) সর্বেশ্বর বসুমেটারী- অসমের বাসিন্দা ৬১ বছর বয়সি এই ব্যক্তি কৃষিক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
১৩) প্রেমা ধনরাজ- পেশায় চিকিৎসক কর্নাটকের বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সি ধনরাজ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে প্লাস্টিকের পুনর্নবীকরণ এবং প্লাস্টিকের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারে বিশেষ কাজ করেছেন।
১৪) উদয় বিশ্বনাথ দেশ পান্ডে- মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সি এই ব্যক্তি ক্রীড়াক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
১৫) ইয়াজকি মনকশ ইতালিয়াজ- গুজরাটের বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সী এই ব্যক্তি প্রখ্যাত মাইক্রোবায়োলজিস্ট এবং অ্যানিমিয়া রোগের জনসচেতনা প্রসারে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
১৬) শান্তি দেবী পাসওয়ান এবং শিবান পাসোয়ান- বিহারের মধুবনির বাসিন্দা এই দম্পতি চিত্রকলায় দেশ-বিদেশ থেকে বহু পুরস্কার পেয়েছেন এবং ২০ হাজারের বেশি মহিলাকে প্রশিক্ষিত করেছেন।
১৭) রতন কাহার- পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ৮৮ বছর বয়সি এই ব্যক্তি প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী।
১৮) অশোক কুমার বিশ্বাস- বিহারের বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সি এই ব্যক্তি চিত্রকলায় বিশেষ জনপ্রিয়।
১৯) বালাকৃষ্ণ সদানম পুঠিয়া ভিথিল- কেরলের কথাকলি শিল্পী ৭৯ বছর বয়সি বিশ্বের দরবারেও ভারতের এই সংস্কৃতি তুলে ধরেছেন।
২০) উমা মহেশ্বরী ডি- অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি উমা মহেশ্বরী কলাক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
২১) গোপীনাথ সোয়াইন- ওড়িশার বাসিন্দা ১০৫ বছর বিশিষ্ট ভজনশিল্পী।
২২) স্মৃতি রেখা চাখমা- ত্রিপুরার বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি স্মৃতিরেখা বস্ত্রশিল্পে অভিনবত্ব এনেছিলেন।
২৩) ওম প্রকাশ শর্মা- মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা ৮৫ বছর বয়সি ওম প্রকাশ নাট্যজগতে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
২৪) নারায়ণ ইপি- কেরলের বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সি নারায়ণ ইপি ৭ দশক ধরে ট্রাডিশনাল নৃত্য তুলে ধরেছেন।
২৫) ভাগবত প্রধান- ওড়িশার বাসিন্দা ৮৫ বছর বয়সি ভাগবত প্রধান নাচে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
২৬)সনাতন রুদ্র পাল- পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট ভাস্কর হলেন ৬৮ বছর বয়সি এই ব্যক্তি।
২৭) বদরাপ্পান এম- তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ৮৭ বছর বয়সি এই ব্যক্তির নৃত্যশিল্পে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
২৮) জর্ডান লেপচা- সিকিমের বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সি এই ব্যক্তি হস্তশিল্পে বিশেষ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।
২৯) মচিহান সাসা- মণিপুরের মৃৎশিল্পী হিসাবে বিশেষ জনপ্রিয় ৭৩ বছর বয়সি মাচিহান।
৩০)গদ্দাম সামাইয়া- তেলঙ্গনার বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সি এই ব্যক্তি নৃত্যক্ষেত্রে বিশেষ পারদর্শিতা দেখিয়েছেন।
৩১ জানকী লাল- রাজস্থানের বাসিন্দা ৮১ বছর বয়সি জানকী লালা নাট্যজগতে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
৩২) দাসারি কোন্ডপ্পা- তেলঙ্গনার বাসিন্দা ৬৩ বছর বয়সি দাসারি বিশিষ্ট যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী।
৩৩)বাবুরাম যাদব- উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা ৭৪ বছর বয়সি বাবুরাম জনপ্রিয় হস্তশিল্পী।
৩৪) নেপাল চন্দ্র সূত্রধর- পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ৮২ বছর বয়সি নেপাল চন্দ্র বিশিষ্ট মুখোশ শিল্পী।
প্রসঙ্গত, দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরত্ন-এর পর অন্যতম সম্মান হল পদ্ম পুরস্কার। এই পুরস্কার তিনটি বিভাগে দেওয়া হয়- পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ এবং পদ্মশ্রী। ভারত সরকার ১৯৫৪ সালে পদ্ম পুরস্কার শুরু করেছিল। ১৯৫৫ সালে এর তিনটি ভাগ হয়। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়।