অন্ধ্র প্রদেশ: আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। শনিবার ভোরে সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অন্ধ্র প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। চন্দ্রবাবুর সমর্থকদের প্রবল বাধার মধ্যেই কোনও ক্রমে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে। টিডিপি-র তরফ থেকে অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে দুর্নীতির সঙ্গে কোনও যোগ নেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। চন্দ্রবাবু নিজেও সব অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে ৩৭১ কোটির দুর্নীতির মামলায় ১ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে চন্দ্রবাবুর।
যে মামলায় টিডিপি প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটির পোশাকি নাম ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট স্ক্যাম।’ গ্রেফতার করার পর চন্দ্রবাবুর আইনজীবীদের হাতে এফআইআর-এর কপি তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে আইনজীবীরা চাইছেন, সব তথ্য-প্রমাণ সামনে আনা হোক। এফআইআর-এ চন্দ্রবাবুর নাম নেই বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
টিডিপি সরকারের আমলে অর্থাৎ চন্দ্রবাবু মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তৈরি হয়েছিল APSSDC বা অন্ধ্র প্রদেশ স্টেট স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। মূলত বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এই APSSDC তৈরি করা হয়েছিল। সেই উদ্যোগের জন্য একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও করেছিল তৎকালীন টিডিপি সরকার। কিন্তু সেই কর্পোরেশনেই বিপুল টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। গত মার্চ মাস থেকে সেই দুর্নীতির তদন্ত শুরু করেছে অন্ধ্র প্রদেশের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট বা সিআইডি।
এই মামলায় এর আগে APSSDC-র সিইও তথা প্রাক্তন রেল আধিকারিক আর্জা শ্রীকান্তকে নোটিস দিয়েছিল সিআইডি। ২০১৬ সালে এই APSSDC তৈরি করা হয়েছিল। সিমেন্স ইন্ডাস্ট্রি সফটওয়্যার ইন্ডিয়া লিমিটেড ও ডিজাইন টেক সিস্টেমস প্রাইভেট লিমিটেড-এর সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল অন্ধ্র সরকারের। সিমেন্স ইন্ডাস্ট্রি সফটওয়্যার-কে বলা হয়েছিল রাজ্য জুড়ে তারা ৭টি সেন্টার তৈরি করবে, যেখানে বেকার যুবকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। চুক্তি ছিল রাজ্য সরকার মোট খরচের ১০ শতাংশ টাকা দেবে আর বাকিটা দেবে সিমেন্স ইন্ডাস্ট্রি।
পরবর্তীতে দেখা যায়, এই প্রকল্পের কোনও অনুমোদন দেয়নি রাজ্য মন্ত্রিসভা। অভিযোগ ওঠে, সিমেন্স ইন্ডাস্ট্রিস নামে ওই সংস্থা আদতে এই প্রকল্পে কিছুই বিনিয়োগ করতে পারেনি। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্য যে ৩৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল, তা খাটানো হয়েছে বিভিন্ন শেল কোম্পানি বা ভুয়ো সংস্থায়। পরবর্তীতে ওই সিমেন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মূল সংস্থা সিমেন্স গ্লোবাল কর্পোরেট অফিস অন্তর্বতী একটি তদন্ত করে। তাতে দেখা যায়, ওই প্রজেক্টের ম্যানেজার সরকারের ৩৭১ কোটি টাকা বিভিন্ন শেল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে। প্রজেক্টের ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছিল ওই সংস্থা। পুরো প্রকল্পে টেন্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে মানা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।