নয়া দিল্লি: প্রতিনিয়ত প্রতিবেশী পাকিস্তানের ইন্ধনে লাগাতার উত্তপ্ত কাশ্মীর উপত্যকা। তার মধ্যেই আরেক প্রতিবেশী চিনের ভারত বিরোধিতা ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে। এবার তিব্বতীয়দের পিপলস্ লিবারেশন আর্মি (Peoples Liberation Army) এবং আধা সেনাতে নিয়োগ করতে নানা রকমের চেষ্টা শুরু করেছে চিন। কিন্তু এখনও অবধি তাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
লাদাখ সংলগ্ন তিব্বতের পশ্চিম দিকে অবস্থিত গারি এলাকায় নয়া নিয়ম চালু করেছে লাল ফৌজ। এই নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক পরিবার থেকে একজন যুবককে সেনা বাহিনীতে যোগ দিতে হবে। বিনিময়ে মিলবে ভাল অঙ্কের বেতন। কিন্তু জানা গিয়েছে চিন সেনার এই কৌশল এখনও খুব একট সফল হয়নি। এখনও অবধি এই নয়া নিয়মে মাত্র ৬৩ জন লাল ফৌজে যোগ দিয়েছে। জানা গিয়েছে নব নিযুক্ত এই লাল ফৌজের এই সদস্যদের শিকানহেতে তিন মাস ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। উচ্চতায় অনে চিন সেনাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সেই কারণেই চিনা সেনা চাইছে আরও বেশি পরিমাণে তিব্বত এলাকা থেকে যুবকরা সেনা বাহিনীতে যোগ দিক।
চাম্বি উপত্যকায় বলপূর্বকভাবে সেনা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার ফতোয়া জারি করেছে চিন সেনা। চাম্বি উপত্যকা সিকিম সংলগ্ন। চলতি বছরেই অগাস্ট মাসের ২ তারিখ থেকে সেনাতে এই নিয়োগ শুরু হয়েছে এবং ১৬ সেপ্টেম্বর অবধি তিব্বতের নাকচুতে এদের প্রশিক্ষণ চলেছে। তাদের এই প্রশিক্ষণের মধ্যে রয়েছে শারীরিক প্রশিক্ষণ, ড্রিল এবং বাসস্থানের রক্ষণাবেক্ষণও। যাদের নিয়োগ করা হয়েছে তাদের ৩০ জনের দলে ভাগ করা হয়েছে এবং যাঁরা তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই চিনা সেনা আধিকারিক। স্থানীয় কিছু তিব্বতিয় নাগরিক তাদের ভাষা অনুবাদ করে প্রশিক্ষণে সহায়তা করছেন। প্রশিক্ষণের সময়ে রয়েছে বেশ কড়াকড়ি। নতুনরা তাদের মোবাইল ফোন প্রশিক্ষকদের হাতে জমা দিয়েছে এবং প্রশিক্ষণের সময়ে তাদের একবারই বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে এই সবের পিছনে রয়েছে ভারতকে চাপে ফেলার কৌশল। সম্প্রতি, পিপলস্ লিবারেশ আর্মির ১০০ জনের একটি দল বেআইনিভাবে ঢুকে পড়েছিল ভারতীয় ভূখণ্ডে। গত ৩০ অগস্ট উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) বারাহতিতে চিনা সেনার একটি দল ঘোড়ায় চেপে আসে এবং সেখানে তিন ঘন্টা ছিল বলে জানা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছিল, চিনা সেনা (Chinese Army) একটি ফুট ব্রিজ ধ্বংস করেছে। তবে, ভারতীয় সেনার (Indian Army) সঙ্গে তাদের মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি। ভারতীয় সেনা ও আইটিবিপি (ITBP) জওয়ানদের সেখানে পৌঁছনোর আগেই গা ঢাকা দেয় চিনা বাহিনী। উল্লেখ্য, পূর্ব লাদাখের প্রায় ১৭ মাস ধরে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে উত্তেজনা চলেছে। ডোকালাম সীমান্তে বেশ কয়েকবার পিপলস্ লিবারেশ আর্মির মুখোমুখি হয়েছে ভারতীয় সেনা বাহিনী।