India-China: ফের আসল রূপ ধরছে চিন, পুরো লাদাখটাই দখল করে নেওয়ার ধান্দা?
Ladakh: চিনের দাবি, রাজতন্ত্রের সময় আকসাই চিন তাদের রাজারা শাসন করতেন। তাই এলাকাটা তাদের। যদিও, এর সেরকম কোনও প্রামাণ্য তথ্য নেই। অন্যদিকে, ভারতের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আছে যে লাদাখ ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের অংশ।
চিন আছে সেই চিনেই। একদিকে লাদাখ, অন্যদিকে সিয়াচেন হিমবাহ। মাঝে প্রায় ১৫০ কিলোমিটারের ব্যবধান। দু-প্রান্তেই লালচোখ দেখানোর চেষ্টা করছে ড্রাগন। সবেমাত্র লাদাখের কিছু এলাকায় শান্তি ফিরেছে। এরমধ্যেই ফের আগ্রাসন দেখাতে শুরু করে দিল বেজিং। লাদাখে, ভারতের জমিতে চিন ২টো পৃথক প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরির কথা ঘোষণা করে দিল।
লাদাখের একটা অংশ সেই বাষট্টির যুদ্ধের পর থেকে চিনের দখলে। যাকে বলা হয় আকসাই চিন। সেখানে রয়েছে চিনের নিয়ন্ত্রণে থাকা হোতান অঞ্চল। যা কিনা আসলে ভারতের। এই হোতানে ২টি কাউন্টি তৈরির কথা জানিয়েছে চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জিনহুয়া। সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর স্বশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন। বলা হয়েছে হেয়ান ও হেকাং নামে এই ২টো নতুন কাউন্টি হোতানের স্থানীয় প্রশাসন চালাবে। যাতে সিলমোহর দিয়েছে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির স্টেট কাউন্সিল।
এর আগে ২০১৭ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে চিন ৩ দফায় অরুণাচল প্রদেশের ৩২টি জায়গার নতুন নাম দিয়েছিল। হোতানে কাউন্টি তৈরি অনেকটা সেইরকমই বলতে পারেন। তবে, সেইসময় সীমান্তে পরিস্থিতি অনেক উত্তপ্ত ছিল। এখন যখন একটা শান্তির পরিবেশ তৈরি হতে শুরু করেছে তখনই এসব করে বেজিং বুঝিয়ে দিল তারা শান্তি চায় না। বিষয়টা নিয়ে আমাদের বিদেশমন্ত্রক চিনের কাছে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আকসাই চিন নিয়ে চিনের মিথ্যাচার কোথায় পৌঁছেছে সেটাও জানা দরকার। চিনের দাবি, রাজতন্ত্রের সময় আকসাই চিন তাদের রাজারা শাসন করতেন। তাই এলাকাটা তাদের। যদিও, এর সেরকম কোনও প্রামাণ্য তথ্য নেই। অন্যদিকে, ভারতের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আছে যে লাদাখ ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের অংশ। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে সিপাহি বিদ্রোহের ঠিক আগে লাদাখের শাসকের সঙ্গে তিব্বতি শাসকের চুক্তি হয়। তাতে লাদাখ ও চিনের তিব্বতের মধ্যে সীমারেখা ঠিক করা হয়। স্বাধীনতার সময় ব্রিটিশরা ভারতের যে মানচিত্র তৈরি করেন, তাতে গোটা লাদাখকে ভারতের অংশ হিসাবেই দেখানো হয়। চিন কিন্তু তখন কোনও আপত্তি করেনি।
১৯৫২ সাল থেকে তারা অবস্থান বদলাতে শুরু করে। প্রায় ভুটানের সমান আয়তনের আকসাই চিনকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করতে শুরু করে। এবং বাষট্টির যুদ্ধে পুরো এলাকাটা দখল করে নেয়। ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ তাঁর ইন্ডিয়া আফটার গান্ধী বইয়ে লিখেছেন ১৯৩০ সাল পর্যন্ত চিনের কোনও সরকারি ম্যাপে আকসাই চিনকে চিনা ভূখণ্ড বলে দেখানো হয়নি। লাদাখের মতো একইভাবে জম্মু-কাশ্মীরের কিছু এলাকাকেও নিজেদের বলে দাবি করে চিন। অধিকৃত কাশ্মীর থেকে যে অঞ্চলটা কেটে চিনকে দিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। জায়গাটা একেবারে সিয়াচেন হিমবাহ লাগোয়া। সেখানেও বেপরোয়া ড্রাগন।