নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অচিরাচরিত শক্তি এবং পরিবেশবান্ধব শক্তির ব্যবহারের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি গ্লাসগোয় জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলন কপ-২৬-এও সেই বার্তাই দিয়েছেন তিনি। ২০৭০ সালের মধ্যে ভারতকে কার্বন নির্গমন মুক্ত দেশ হিসেবে তুলে ধরার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দেখানো সেই পথে ইতিমধ্যেই এগোতে শুরু করে দিয়েছে ভারত। টানা তিন বছর ধরে কয়লা নির্ভর প্রকল্পগুলির তুলনায় পরিবেশ বান্ধব শক্তি নির্ভর প্রকল্পগুলিকে অনেক বেশি বিনিয়োগ টেনেছে। আগামী বছরগুলিতে এই পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিগুলির ব্যবহার আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
নয়া দিল্লির এক গবেষণা সংস্থা ক্লাইমেট ট্রেন্ডস অ্যান্ড সেন্টার ফর ফিনান্সিয়াল অ্যাকাউন্টেবিলিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, পরিবেশবান্ধব শক্তি নির্ভর প্রকল্পগুলি গত বছর বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোট বিনিয়োগের ৭৪ শতাংশ পেয়েছে। যা ভারতীয় মুদ্রার হিসেবে ২৪ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে পরিবেশ বান্ধব শক্তির ক্ষেত্রে প্রায় ২২ হাজার ৯৭১ কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছিল। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ৬ শতাংশ বেড়েছে বিনিয়োগ।
অন্যদিকে কয়লা নির্ভর প্রকল্পগুলির থেকে ধীরে ধীরে মুখে ফেরাতে শুরু করেছে ভারত। পরিসংখ্যান থেকে অন্তত এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। ২০২০ সালের হিসেব অনুযায়ী মাত্র ৮ হাজার ৫২০ কোটি টাকা (অর্থাৎ প্রায় ২৬ শতাংশ) বিভিন্ন কয়লা চালিত প্ল্যান্টের তহবিলে গিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে কয়লা নির্ভর প্ল্যান্টগুলির ক্ষেত্রে এই বিনিয়োগ ছিল ৮৬ শতাংশ। এর থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কতটা দ্রুত ভারত কয়লা নির্ভর প্রকল্পগুলি থেকে মুখ ফেরাচ্ছে।
উল্লেখ্য, নভেম্বর মাসেই গ্লাসগোয় বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬-এ যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোটা বিশ্ব এই সময় যে সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা থেকে নিস্তারের জন্য ভারতের পদক্ষেপগুলির কথা তুলে ধরেছিলেন নমো। স্থির করেছেন লক্ষ্যমাত্রাও, ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে ভারতে। ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ভারতীয় রেল।
প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট ‘নন ফসিল’ শক্তির আধার হবে ভারত। পাশাপাশি ওই একই সময়ের মধ্যে দেশের মোট প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের ৫০ শতাংশ পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি থেকে ব্যবহার করা হবে। এখন থেকে শুরু করে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ কোটি টন কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনবে ভারত। কার্বনের উপর দেশীয় অর্থনীতির নির্ভরশীলতা ৪৫ শতাংশ কমিয়ে আনা হবে ২০৩০ সালের মধ্যে।
আরও পড়ুন : Aryan Khan Drug Case: মাদক মামলায় স্বস্তিু আরিয়ানের! আর হাজিরা দিতে হবে না এনসিবি দফতরে