জয়পুর: আজ প্রতীকী অনশনে বসছেন রাজস্থানের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই অনশনের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। নিজের সরকারের বিরুদ্ধেই খড়গহস্ত হয়েছেন পাইলট। আর ফের একবার প্রকাশ্যে গেহলট-পাইলট দ্বৈরথ। তাঁদের এই ‘যুদ্ধে’ কংগ্রেসের ফের মুখ পুড়তে পারে বলে আশঙ্কা রাজনীতির কারবারিদের। তার উপর এই বছরেই আবার রাজস্থানে রয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। এই আবহে সতর্ক কংগ্রেসও। তাই সোমবারই সচিন পাইলটকে সাবধান করল দল। অনশনের মতো কোনও পদক্ষেপ করলে তা দলবিরোধী কার্যকলাপ বলে বিবেচিত হবে।
সূত্রের খবর, নিজের সিদ্ধান্তে অনড় পাইলট। তিনি আজ বিজেপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে প্রতীকী অনশন করবেনই। তবে তিনি অনশন করলেও তাঁর সমর্থনকারী বিধায়কদের এই অনশনে যোগ দিতে মানা করেছেন পাইলট। তবে তাঁরা এই অনশনে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে পাইলটের এই গেহলট প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন রাজস্থান কংগ্রেসের ইন-চার্জ সুখজিন্দর সিং রানধাওয়া। সোমবার একটি বিবৃতি জারি করে তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সচিন পাইলটের দিনব্যাপী অনশন দলীয় স্বার্থ বিরোধী এবং দলবিরোধী কার্যকলাপ। নিজের সরকারের সঙ্গে কোনও সমস্যা থাকলে তা গণমাধ্যম ও জনসাধারণের পরিবর্তে দলীয় ফোরামে আলোচনা করা যেতে পারে।” তাঁর ব্যাখ্যা, গত পাঁচ বছর ধরে তিনি রাজস্থান কংগ্রেসের ইন-চার্জ পদে রয়েছেন। তবে কোনও সমস্যা নিয়ে তিনি আলোচনা করেননি বলে জানিয়েছেন সুখজিন্দর। তিনি আরও বলেন, “আমি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং আমি এখনও শান্ত সংলাপের আবেদন জানাচ্ছি। কারণ তিনি কংগ্রেসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি দলের কাছে একটা সম্পদ।” দলীয় ইন-চার্জ বারবার এই ধরনাকে দল বিরোধী কার্যকলাপ আখ্যা দিলেও তা মানতে নারাজ পাইলট পক্ষ। সচিন পাইলট সমর্থনকারী এক কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, এই ধরনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটার স্পষ্টতই সরকারের বিষয়ে।
প্রসঙ্গত, রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠক থেকে একদিনের অনশনের ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস নেতা সচিন পাইলট। সচিন জানিয়েছেন, পূর্ববর্তী বিজেপির বসুন্ধরা রাজে সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তদন্তের জন্য অশোক গেহলটের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। পরপর দু’বার চিঠিও লিখেছিলেন। তবে তাঁর কোনও উত্তর পাননি। আর সেই তদন্তের দাবি নিয়েই ধরনা প্রদর্শন করবেন সচিন। যদিও বিজেপি আমলে দুর্নীতির তদন্তের দাবিই করে গেহলট প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করছে পাইলট। তবে এর পিছনে অন্য উদ্দেশ্য দেখছেন রাজনীতির কারবারিরা। এই বছরই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন। এই আবহে কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর চাপসৃষ্টি করে রাজস্থানে কংগ্রেসের প্রধান মুখ হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন সচিন পাইলট। এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।
এদিকে গতকাল সচিন পাইলটকে উদ্দেশ্য করে একটি বিবৃতি জারি করে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, “বিজেপি কীভাবে রাজস্থানে আমাদের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র করেছিল এবং আমাদের বিধায়কদের কেনার চেষ্টা করেছিল তার তদন্ত করা হচ্ছে।” খেরা আরও বলেন, “এটা বলা ভুল হবে যে তদন্ত চলছে না, কারণ তদন্ত চলছে এবং কারও যদি কোনও অভিযোগ থাকে তবে তাঁকে এটি কংগ্রেসের ইনচার্জের নজরে আনতে হবে।” নির্বাচনের আগে ফের পাইলট-গেহলট দ্বন্দ্বে রাজস্থানে ফের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।