রাঁচি: মৌনতা ভাঙলেন অবশেষে! কংগ্রেস সাংসদ ধীরজ সাহুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ টাকা। যা নিয়ে গোটা দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বড় দুর্নীতির নজির বলে কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কংগ্রেস সাংসদের বাড়িতে এত টাকা কোথা থেকে এল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ১০ দিন পর অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন কংগ্রেস সাংসদ। শুক্রবার প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, এটা তাঁর বা কংগ্রেস দলের টাকা নয়, এটা তাঁর পারিবারিক ব্যবসার টাকা।
ধীরজ সাহু ৩৫ বছর ধরে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ এটাই প্রথম বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন কংগ্রেস সাংসদ। এদিন এক সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাংসদ ধীরজ সাহু বলেন, “আমি মর্মাহত এবং আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, যে টাকা উদ্ধার করা হয়েছে সেটা আমার প্রতিষ্ঠানের। আমরা ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মদের ব্যবসা করছি। আমি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং ব্যবসায় খুব একটা মনোযোগ দিইনি। আমার পরিবার দেখাশোনা করত।”
কংগ্রেস সাংসদ আরও জানান, তাঁদের পরিবারটি এখনও যৌথ পরিবার এবং অনেক বড়। তাঁরা ৬ ভাই এবং সকলেই ব্যবসায় জড়িত। তাঁদের সন্তানেরাও পারিবারিক কোম্পানির বিভিন্ন দিক দেখাশোনা করেন। যে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণভাবে ব্যবসার টাকা এবং কোনও দুর্নীতি নেই বলেও দাবি জানান তিনি। ধীরজ সাহু বলেন, “যে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা আমাদের মদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সংস্থাগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত। আমাদের ব্যবসা স্বচ্ছ। মদ বিক্রি থেকে অর্থ আসে এবং মদের ব্যবসায় নগদে বিক্রি হয়। নগদ বিক্রি থেকে ওঠা টাকা এগুলি ছিল এবং এই টাকার সঙ্গে কংগ্রেস বা অন্য কোনও দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এটা আমার কোম্পানির টাকা।”
৩৫৩ কোটি টাকার পরিমাণ বিপুল হলেও এটা কালো টাকা নয় বলেই দাবি ধীরজ সাহুর। তিনি জানান, তাঁর পরিবারের সদস্যরা মদের ব্যবসায় জড়িত এবং প্রয়োজনে তাঁরা আয়কর বিভাগে এই টাকার হিসাব দেবেন। এটা ‘কালো টাকা’ নাকি ‘সাদা টাকা’- তার বিচার আয়কর দফতরকেই করার আবেদন জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ। পাশাপাশি তদন্তেও তিনি সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ডের সাংসদ ধীরজ সাহুর বাড়ি ও অফিসে টানা কয়েকদিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে ৩৫৩ কোটি টাকা উদ্ধার করেছেন আয়কর আধিকারিকেরা। এছাড়া সোনা ও রুপোর প্রচুর গয়নাও উদ্ধার হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা ‘কালো টাকা’ বলেই তকমা দিয়েছে বিজেপি। ধীরজ সাহু কংগ্রেস সাংসদ হওয়ায় হাত শিবিরের দিকেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ধীরজ সাহুর দায় নিতে নারাজ কংগ্রেস নেতৃত্ব।