INDIA Alliance: জোট-শরিকেরা ‘অসন্তুষ্ট’, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বুধবারের বৈঠক স্থগিত করে দিল কংগ্রেস
INDIA Alliance: ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক স্থগিত করে দিল কংগ্রেস। ৬ ডিসেম্বর ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে বলে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়। জোটের অন্যতম প্রধান তিন নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার এবং অখিলেশ যাদব বৈঠকে যোগ না দেওয়ার জন্যই বৈঠক স্থগিত করা হল বলে সূত্রের খবর।
নয়া দিল্লি: জোট শরিকেরা বিক্ষুব্ধ। ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক স্থগিত করে দিল কংগ্রেস। ৬ ডিসেম্বর ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে বলে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়। বৈঠক কবে হবে তা পরে ঠিক হবে বলেও কংগ্রেস জানিয়েছে। জোটের অন্যতম প্রধান তিন নেতৃত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার এবং অখিলেশ যাদব বৈঠকে যোগ না দেওয়ার জন্যই বৈঠক স্থগিত করা হল বলে সূত্রের খবর। তাহলে কি এবার বিরোধী-জোটে কংগ্রেসের দাদাগিরি কমছে? এমন প্রশ্ন-ই উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
তিন রাজ্যে ভরাডুবির পরই ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। বুধবার দিল্লিতে নিজের বাসভবনে বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। কিন্তু, হঠাৎ করে কংগ্রেসের একতরফাভাবে বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্তে অসন্তোষ দেখা দেয় ইন্ডিয়া জোটে। এতদিন কংগ্রেস কী করছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জোট শরিকেরা। ফলে জোট শরিকদের অনেকেরই এই বৈঠকে যোগ দেওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। আবার বৈঠকে আহ্বান করা হয়নি বলে দাবি জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবমিলিয়ে, বুধবারের বৈঠকের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। পরিস্থিতি বুঝেই এবার কংগ্রেস নেতৃত্ব খানিক পিছু হটে ইন্ডিয়া-র বৈঠক স্থগিত করে দিল বলে সূত্রের খবর।
গত জুন মাসে পটনায় প্রথম ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক হয়। তারপর মুম্বই, বেঙ্গালুরু-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কয়েক দফায় ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক বসেছে। প্রতিটি বৈঠকেই কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার, এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, তামিলনমাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন-সহ অবিজেপি সকল নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, দিল্লিতে কংগ্রেসের ডাকা বুধবারের বৈঠকে এঁদের অধিকাংশেরই উপস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
বিজেপি-বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম মুখ হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, এবার কংগ্রেসের ডাকা ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে তাঁকে ডাকা হয়নি বলে জানিয়েছেন মমতা। স্বাভাবিকভাবেই বুধবারের দিল্লির বৈঠকে তিনি যে যাচ্ছেন না, তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে, জোট গড়ার অন্যতম কাণ্ডারী নীতীশ কুমার এবং অখিলেশ যাদবও একতরফাভাবে কংগ্রেসের ডাকা বুধবারের বৈঠকে যোগ দেবেন না বলে সূত্র মারফৎ জানা যায়। একইভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেন আপ সুপ্রিমো তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও। আবার রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউন-এর জেরে বুধবারের বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন। এমনকি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান হেমন্ত সোরেনও বৈঠকে যাবেন না বলে জানান। স্বাভাবিকভাবেই ওই বৈঠকের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এর মধ্যে ৩ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের শোচনীয় পরাজয়ের পর হাত শিবিরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জোট শরিকেরা। জোট শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে লড়াই করে কংগ্রেস যে ‘একলা চলো’-র সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং সেটা যে সম্পূর্ণ ভুল ছিল, তা রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ ও ছত্তীসগঢ়ের ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট। যা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন এসপি সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। জোট শরিকদের পরোয়া না করে কংগ্রেস যে অহঙ্কার দেখিয়েছিল, ভোটের ফলাফলে তারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে জানান তিনি। একইভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলার সময় কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আপ ও জেডিইউ। একই সুর শোনা যায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। আঞ্চলিক দলের সঙ্গে কংগ্রেস আসন-সমঝোতায় গেলে ফল অন্যরকম হত বলে দাবি মমতার। সবমিলিয়ে, অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস।
সবচেয়ে পুরানো ও বড় দল হিসাবে কংগ্রেস এতদিন বিরোধী-জোটেও যে ‘দাদাগিরি’ দেখাত, সেটা যে আর চলবে না, তা জোট শরিকদের এই মন্তব্যেই স্পষ্ট। এর উপর ৪ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরই তড়িঘড়ি কংগ্রেস নেতৃত্বের এককভাবে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের আহ্বান ভালভাবে মেনে নেননি জোট শরিকেরা। তাই পরিস্থিতি বুঝেই কংগ্রেস বৈঠক স্থগিত করে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।