মুম্বই: হাসপাতালে গার্লস হস্টেলের স্নানঘরে স্নান করতে গিয়েছিলেন মহিলা চিকিৎসক। স্নান করতে করতে তাঁর কেমন একটা অস্বস্তি হয়। মনে হয়, গোপনে কেউ যেন তাঁর স্নান করা দেখছে। এরপরই সচেতন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সত্যিই কেউ তাঁকে ওই অবস্থায় দেখছে কিনা, তা জানতে তিনি এদিক-ওদিক তাকান। এরপরই দেখেন, স্নানাগারের জানলা দিয়ে হাসপাতালেরই এক ঠিকাকর্মী মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় তাঁর স্নানদৃশ্য রেকর্ড করছে। এরপরই তিনি চিৎকার করে ওঠেন এবং হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরা এসে ধরে ফেলেন ওই ঠিকাকর্মীকে। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে উত্তাল কলকাতা। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এরই মধ্যে, গোপনে এক মহিলা চিকিৎসকের স্নানের ছবি তুলতে গিয়ে ধরা পড়লেন হাসপাতালেরই এক ঠিকাকর্মী। ঘটনাটি অবশ্য কলকাতার নয়, মুম্বইয়ের কান্দিভালির এক সরকারি হাসপাতালের।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার (৬ অগস্ট)। ওই দিন সকালে ৩০ বছর বয়সী এক মহিলা চিকিৎসক হাসপাতালের মহিলা হস্টেলের তৃতীয় তলের স্নানাগারে স্নান করছিলেন। স্নান করতে গিয়ে অস্বস্তি হওয়ায় তিনি পিছনে ঘুরে দেখেন। দেখতে পান, তিনতলার জানলার কার্নিশে দাঁড়িয়ে একজন মোবাইলে তাঁর স্নানের ভিডিয়ো তুলছে। তিনি ভয়ে চিৎকার করে ওঠেন। তাঁর সহকর্মীরা ও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরা দ্রুত সেখান ছুটে আসেন। হাতে-নাতে ধরা পড়ে যান জয়েশ সোলাঙ্কি নামে হাসপাতালের এক ঠিকা কর্মী। তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোনও পাওয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার ফোন কেড়ে নিয়ে পরীক্ষা করেন। জয়েশ সোলাঙ্কির মোবাইল ফোনে ওই মহিলা চিকিৎসকের স্নানের একটি ৪ মিনিট দীর্ঘ ভিডিয়ো পাওয়া যায়।
এরপর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কান্দিভলি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। হাসপাতালে আসে পুলিশের একটি দল। অভিযুক্ত ঠিকা কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ওই মহিলা চিকিৎসক। অভিযুক্ত জয়েশ সোলাঙ্কির ফোনটি বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। জয়েশের বিরুদ্ধে, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭৭ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গোপনীয়তার যুক্তিসঙ্গত প্রত্যাশা করা যায়, এমন কোনও জায়গায় কোনও মহিলার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তোলার অপরাধের সাজা নির্ধারণ করা হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায়।
কিন্তু, জয়েশ সোলাঙ্কি কি শুধুমাত্র ওই মহিলা চিকিৎসকের স্নানের ভিডিয়োই রেকর্ড করেছিলেন, নাকি হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীরাও তার লালসার শিকার হয়েছে? বর্তমানে পুলিশ এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে। তাঁর ফোনের ফরেন্সিক বিশ্লেষণ চলছে। অভিযুক্ত জয়েশকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও কোনও অশ্লীল কাজে যুক্ত ছিল কিনা, এই কাজে তার কোনও সাগরেদ ছিল কিনা, তারও খোঁজ চলছে।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)