দেশে ফের সামান্য বাড়ল করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ, একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ১২১৭ জনের। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের ৫টি রাজ্য থেকেই ৬৭.২১ শতাংশ আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। এরমধ্যে কেবল কেরল থেকেই ৪৩ শতাংশের বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। অন্য়দিকে, দেশে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে টিকাকরণ। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের মধ্যে প্রায় ৬ কোটি নাগরিকই ইতিমধ্যে করোনা টিকার প্রথম ডোজ় নিয়েছে। দেশের মোট টিকাকরণের সংখ্যাও ১৭০ কোটির গণ্ডি পার করেছে। করোনা ও ওমিক্রন সংক্রান্ত যাবতীয় আপডেট দেখে নিন একনজরে-
অন্ধ্র প্রদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২ জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজারের নিচে নেমেছে। আজ অন্ধ্র প্রদেশের করোনা মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ হাজার ১১৯। নতুন করে রাজ্যে ১ হাজার ৬৭৯ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ থেকে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হয়েছিল। একমাসের কিছু বেশি সময়েই দেশের ১ কোটি কিশোর কিশোরী টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য।
স্বস্তির খবর শোনালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের হার ১৭ শতাংশ কমেছে। পাশাপাশি সংস্থা জানিয়েছে আমেরিকাতেও সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে। মৃত্যুর হার নিয়ে স্বস্তিজনক খবর শোনা গিয়েছে। জানা গিয়েছে বিশ্বব্যাপি মৃত্যুর হারও ৭ শতাংশ কমেছে।
করোনা সংক্রমণের হার কমে যাওয়ার কারণে নাইট কার্ফু প্রত্যাহার করে নেওয়া সিদ্ধান্ত নিল হিমাচল প্রদেশ সরকার। হিমাচল প্রদেশের ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে এখন থেকে বন্ধ বা খোলা যায়গায় যেকোনও ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশ লোককে নিয়ে করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলে লাইভ কথাবার্তার সময়ই মাহমুদ বলেন, “কার্যকরী টিকার যুগে দাঁড়িয়েও অর্ধেক মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যজনকের থেকেও বেশি কিছু। যেখানে সবাই বলছেন যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষমতা কম, এতে সংক্রমণ গুরতর আকার ধারণ করছে না, এই তথ্যটা তাদের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে যে ওমিক্রনের খোঁজ মেলার পর থেকে এখনও অবধি ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ২০২১ সালের নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মেলার পর থেকে এখনও অবধি বিশ্ব জুড়ে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ওমিক্রনই শেষ নয়। এরপরও করোনা অন্য কোনও নতুন ভ্যারিয়েন্ট আছড়ে পড়তে পারে এবং তা আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে।
ধীরে ধীরে কমছে করোনা সংক্রমণ, তাই বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিল মুম্বই পুরসভা। মুম্বইয়ের মেয়র কিশোরী পেডনেকর জানান, সংক্রমণ কমায় চলতি মাসের শেষভাগেই মুম্বইয়ে আনলক পর্ব শুরু হবে।
করোনার কোনও ওষুধ নেই ঠিকই, তবে চিকিৎসা নিশ্চয়ই আছে। করোনা চিকিৎসার অঙ্গ হিসেবে ভারতের বাজারে মুক্তি পেল প্রথম ন্যাজাল স্প্রে। মুম্বই ভিত্তিক আন্তর্জাতিক ওষুধ প্রস্তুত সংস্থা গ্লেনমার্ক ও স্যানোটাইজের অংশীদারিত্বে ভারতের বাজারে এসেছে নাইট্রিক অক্সাইড ন্যাজাল স্প্রে। প্রাপ্ত বয়স্ক করোনা রোগীর চিকিৎসায় এই স্প্রে ব্যবহার করা যাবে বলেই জানা গিয়েছে। আপাতভাবে ফ্যাবিস্প্রে নামেই ন্যাজাল স্প্রে বাজারে এনেছে প্রস্তুতকারী সংস্থা।
পড়ুন বিস্তারিত Nasal Spray for Covid: নাক দিয়ে ওষুধ নিলেই সারবে করোনা! বাজারে এল প্রথম ‘ন্যাজাল স্প্রে’
দারুণ গতিতে এগোচ্ছে দেশের টিকাকরণ কর্মসূচি (COVID-19 Vaccination)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে দেশের ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য যে টিকাকরণ কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল, তাতে ইতিমধ্যেই প্রায় ৬ কোটি নাবালক-নাবালিকা তাদের করোনা টিকার প্রথম ডোজ় (First Dose of Vaccine) নিয়েছে, মঙ্গলবার এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য (Mansukh Mandaviya)।
ওমিক্রনের কারণেই দেশে ব্যপক হারে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য জানান, দেশে ডমিন্যান্ট ভ্যারিয়েন্টে পরণত হয়েছে ওমিক্রন। দেশের বর্তমান করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের ৫টি রাজ্য থেকেই দৈনিক সংক্রমণের ৬৭.২১ শতাংশের খোঁজ মিলছে। এরমধ্যে শীর্ষে রয়েছে কেরল, সেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৭১। দেশের মোট সংক্রমণের ৪১.৩ শতাংশই কেরল থেকে খোঁজ মিলছে। এরপরেই রয়েছে মহারাষ্ট্র, এই রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬১০৭ জন। এরপরে রয়েছে তামিলনাড়ু, সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫১৯। কর্নাটক ও রাজস্থানেও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৪৫২ এবং ৩৪১১।
আক্রান্তের সংখ্যা কমার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থতার হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ৭২ হাজার ২১১ জন। এই নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪ কোটি ১০ লক্ষ ১২ হাজার ৮৬৯-এ। বর্তমানে দেশে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬.৭০ শতাংশে।
করোনা সংক্রমণ কমার সঙ্গে সঙ্গেই কমেছে সংক্রমণের হারও। বর্তমানে দেশে সংক্রমণের হার ৪.৫৪ শতাংশ। সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ৭.৫৭ শতাংশ।
দেশের করোনা সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কমায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৮ লক্ষ ৯২ হাজার ৮২৮। দেশের মোট আক্রান্তের ২.১১ শতাংশ সক্রিয় রোগী।
দেশে একদিনেই ১২১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণে। এই নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫ লক্ষ ৫ হাজার ২৭৯-এ।
লাখের গণ্ডির নীচে থাকলেও, দেশে সামান্য বাড়ল করোনা সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ হাজার ৩৬৫ জন, যা গতকালের তুলনায় ৫.৬ শতাংশ বেশি। এই নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪ কোটি ২৪ লক্ষ ১০ হাজার ৯৭৬-এ।