নয়া দিল্লি: নতুন বছর থেকেই শুরু হচ্ছে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ। তাদের টিকাকরণের জন্য দেশের হাতে রয়েছে কেবলমাত্র দুটি টিকা- জ়াইডাস ক্যাডিলার জডাইকোভ-ডি ও ভারত বায়োটেক সংস্থার কোভ্যাক্সিন। এরমধ্যে কোভ্যাক্সিন শিশুদের মধ্যে ভাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠন করতে সক্ষম বলেই জানালেন দেশের করোনা সংক্রমণ ও টিকাকরণের জন্য গঠিত ওয়ার্কিং গ্রুপের (NTAGI) চেয়ারম্যান ডঃ এনকে অরোরা।
বড়দিনেই বড় ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৩ জানুয়ারি থেকেই ছোটদের করোনা টিকাকরণ শুরু করা হচ্ছে। আপাত, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীরাই এই টিকা পাবেন। করোনা টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আপাতত কোভ্যাক্সিনের কথাই চিন্তাভাবনা করা হয়েছে। শিশুদের এই টিকা দিলে কতটা সুরক্ষা পাওয়া যাবে, সে বিষয়েই রবিবার কথা বলেন ডঃ এনকে অরোরা।
তিনি বলেন, ” ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সীরা, বিশেষত ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই প্রাপ্তবয়স্কদের মতো। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১৮ অনুর্ধ্বদের করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর দুই-তৃতীয়াংশই এই বয়সসীমার অন্তর্গত ছিল। সেই কারণেই সদ্য কৌশোরকালে পা দেওয়া নাগরিকদের সুরক্ষার কথা ভেবে, তাদের টিকাকরণের ঘোষণা করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই টিকাকরণের আরও দুটি সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রথমত, ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় যেতে হয়, ফলে তাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। বিশেষত বর্তমান ওমিক্রন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই বয়সীদের টিকাকরণ অত্যন্ত জরুরি। দ্বিতীয়ত, অনেক সময়ই অপ্রাপ্তবয়স্করা বাড়ির বড়দের থেকে সংক্রমিত হয়ে যাচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ হয়ে যাওয়ায়, তারা সংক্রমণ থেকে কিছুটা সুরক্ষা পেলেও শিশুদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়য। সেই কারণেও ধাপে ধাপে শিশুদের টিকাকরণ শুরু করা হচ্ছে।”
ইতিমধ্যেই ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার কাছ থেকে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের উপর জরুরিভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। ডঃ অরোরা জানান, ট্রায়ালে এই ভ্যাকসিন যথেষ্ট ভাল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখিয়েছে, তাই শিশুদের টিকাকরণ নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এমন ভ্যাকসিন রয়েছে, যা শিশুদের উপর প্রয়োগের জন্য অনুমোদন পেয়েছে। কোভ্যাক্সিন ট্রায়ালে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়তে সক্ষম বলেই প্রমাণিত হয়েছে। তাছাড়া এই ভ্যাকসিনটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। সামান্য় ব্যাথা ও হাত ফোলা ছাড়া তেমন কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।”
শিশুদের টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি বলেন, “সংক্রমণের প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম হলেও আমরা জানি যে বহু স্কুলই খুলে গিয়েছে, কিন্তু বহু অভিভাবকই নিজেদের সন্তানকে এই পরিস্থিতিতে স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাচ্ছেন না। এই টিকাকরণ কর্মসূচি তাদের কিছুটা ভরসা দেবে। আমি মনে করি এটা নববর্ষের দারুণ উপহার।”