নয়া দিল্লি: একুশের বিধানসভা ভোট মেটার পরই বঙ্গ রাজনীতির অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে উত্তরবঙ্গ। কেউ কেউ পৃথক কেন্দ্রশাসিত উত্তরবঙ্গের দাবি জানিয়েছেন, কেউ আবার সংসদে গোর্খাল্যান্ডের স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন। এহেন জল্পনার মাঝেই পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের জল্পনা নিয়ে বিমল গুরুং ও বিনয় তামাং কাছাকাছি এসেছেন। তবে সুদূর দিল্লিতেও যে পাহাড় নিয়ে সক্রিয়তা বজায় রয়েছে, শনিবার ফের একবার সেই দৃষ্টান্ত দেখতে পাওয়া গেল। কৌতূহল বাড়িয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করলেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা।
সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে পাহাড় বিষয়ক আলোচনা করেছেন তিনি। যদিও দু’জনের মধ্যে ঠিক কী কী কথা হয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে সূত্র মারফৎ যেটুকু জানা গিয়েছে, সেটাই নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, শনিবার বিকেলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে পাহাড় সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা করেন রাজু বিস্তা। রাষ্ট্রপতিকে পাহাড়ে আসার আমন্ত্রণও তিনি জানিয়েছেন। তবে কোবিন্দ সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন কিনা তা জানা যায়নি। উত্তরবঙ্গ এবং পাহাড়ের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই সাক্ষাৎ যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
Honoured to meet with Hon’ble President H.E Shri Ram Nath Kovind ji to discuss important issues concerning our region, and seek his guidance.
I have also requested him to visit Darjeeling! pic.twitter.com/hviNdwDOIu
— Raju Bista (@RajuBistaBJP) August 14, 2021
প্রসঙ্গত, সদ্য সমাপ্ত বাদ অধিবেশনেও পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবিতে সুর চড়াতে শোনা গিয়েছিল রাজু বিস্তাকে। যদিও তিনি পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি একবারও মুখে আনেননি। কিন্তু কেন বারবার এই দাবি এই দাবি ওঠে, তার বিশদ ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রের কাছে এই বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলেন।
গত ২৯ জুলাই নিজের ভাষণে পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সের অনুন্নয়ন এবং গোর্খাদের জাতিসত্ত্বার বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। শেষে বলেন, “এই সমস্ত কারণেই থেকে থেকে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবি ওঠে। আলাদা রাজ্যের দাবি কেবল উন্নয়নের স্বার্থে নয়, ভারতে থাকা দেড় কোটি গোর্খার সত্ত্বাও এর সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। এলাকার মানুষের কথা মাথায় রেখে আমাদের দল বিজেপিও স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানাবো, এই প্রক্রিয়া যেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করা যায়।”
উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোট মেটার মাসখানেক পরেই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা কেন্দ্রশাসিত উত্তরবঙ্গের দাবি করেছিলেন। পরবর্তী সময় তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসন দেওয়া হয়। আরেক সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ঘুরপথে সেই দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। তিনিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসন পান। এরপর সংসদে রাজু এই বিষয়ে মুখ খোলেন, পরবর্তী সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করেন, এবং এ বার রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও দেখা করে সেই ইস্যুতেই আলোচনা করলেন। ফলে পাহাড়ের রাজনীতি নিয়ে তিস্তা দিয়ে অনেক জল গড়ানো যে বাকি, সেই ইঙ্গিত ক্রমশই দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। আরও পড়ুন: ‘এত মানুষের মৃত্যু আমাকে যন্ত্রণা দিয়েছে’, করোনা নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করলেন রাষ্ট্রপতি