বাঘপত: গত কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ ছিল সাত বছরের শিশুর। অবশেষে নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন পর মঙ্গলবার তার হদিশ মিলল। আজ আখের খেতে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) বাঘপতের (Baghpat) ঘটনা। নিখোঁজ থাকার পর কীভাবে তার দেহ উদ্ধার হল, মৃত্যুর পিছনেই বা কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তা জানতে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এ দিন পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরের কাকা এবং ভাই মিলে তাকে খুন করেছে। ইতিমধ্যেই কাকা, ভাই সহ তিনজনকে শিশুর রহস্যজনক মৃত্যুর (Child Death) ঘটনায় আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সাত বছরের এই শিশুকে প্রথমে অপরহণ করে তার কাকা ও দাদা। তাদের সঙ্গে কোনও এক তৃতীয় ব্যক্তিও এই কাজে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা স্বীকার করে নিয়েছে যে, শিশুর বাবার থেকে টাকা চাওয়ার জন্যই এই কাজ করেছে তারা। টাকার অঙ্কটাও খুব একটা কম নয়। ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা হাতানোর উদ্দেশ্য ছিল তাদের। প্রসঙ্গত, জানা গিয়েছে, এই শিশুর দাদু সরকারি চাকরি করতেন। সম্প্রতি তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এবং অবসরকালীন তিনি বেশ অনেকখানি টাকা পেয়েছেন। সেই টাকা দিয়েই কিছু জমিও কিনেছেন।
গত ১৫ ডিসেম্বর টিউশনে গিয়েছিল সৌর্য্য ওরফে সূর্যাংশ। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। সেখান থেকেই তাকে অপহরণ করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে। ছেলে বাড়ি ফিরছে না দেখে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শিশুর বাবা সোহানবীর। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ফাখারপুর থানার পুলিশ এফআইআর করেন এবং তদন্ত শুরু করেন। আর তদন্তে নেমেই পুলিশের সন্দেহ হয় সৌর্য্যের কাকা বিনীত ও দাদা অক্ষিতকে। এই তালিকায় ছিল এক তৃতীয় ব্যক্তি ড্যানি। তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট নীরজ কুমার জাদাইন জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা স্বীকার করেছে সৌর্যকে তারা অপহরণ করে খুন করেছে। তাদের স্বীকারোক্তির সূত্র ধরেই মঙ্গলবার তল্লাশি চালায় পুলিশ। আর বাড়ি থেকেদেড় কিলোমিটার দূরে আখের খেত থেকে শৌর্যের দেহ উদ্ধার হয়। গতকাল রাতেই পরিবারের অনুরোধে তার দেহের ময়নাতদন্ত হয়।
এদিকে অভিযুক্তরা পুলিশকে জানিয়েছে, শৌর্য বাইকে চড়তে খুব ভালবাসত। গত ১৫ ডিসেম্বর টিউশন ক্লাস থেকে যখন সে বাড়ি ফিরছিল তখন তাকে বাইকে চড়ানোর লোভ দেখানো হয়। তখনি তাকে নিয়ে তারা অন্য জায়গায় চলে আসে। পরিস্থিতি কিছুটা ঠান্ডা হলেই মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করার কথা ভাব তিনজন। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের পরিকল্পনায় বদল ঘটে। শৌর্য সকলকেই চিনে ফেলবে এই ভয়ে তারা তাকে খুন করে দেয়। এদিকে তাদের যাতে কেউ সন্দেহ না করে তাই শৌর্যের খোঁজ করাতে তার পরিবারকেও সাথ দিয়েছিল এই তিন অভিযুক্ত। আপাতত তারা পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।