নয়াদিল্লি: ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাক্তন স্টিওয়ার্ড ছিলেন বালেশ কুমার। সপ্তাহ খানেক আগেও তিনি ‘মৃত’ ছিলেন। তাঁর পরিবারের লোক, দিল্লি পুলিশ, রাজস্থান পুলিশ সকলেই জানত নৌবাহিনীর এই প্রাক্তন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে ১৯ বছর আগে। ২০০৪ সালে রাজস্থানের জোধপুরে একটি লরি দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলেই সকলে জানত। বালেশের বাবাও সে সময় তাঁর দেহ সনাক্ত করেছিলেন। তাঁর বাবা ২০২১ সালে মারা যান। কিন্তু সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী দল একটি তথ্য পান। যে বালেশের মৃত্যু হয়নি। তিনি আমন সিং নামে নজফগড়ে থাকেন। এমনকি একটি খুন এবং ডাকাতির ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত বলেও জানতে পারে পুলিশ। এর পরই ঘটনার তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশ। তার পর গ্রেফতার করা হয় ৬৩ বছরের ওই ব্যক্তিকে।
দিল্লি পুলিশের সিপি (ক্রাইম) রবীন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, ১৯৯৬ সালে বালেশ নৌবাহিনী থেকে অবসর নেন। এর পর লরির ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সেই লরির রেজিস্ট্রেশনন অবশ্য ছিল তাঁর ভাইয়ের নামে। ২০০০ সালে একটি ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ছিলেন বালেশ, তাঁর বাবা এবং রাজেশ নামের এক ব্যক্তি। কোটা শহরের একটি বাড়ি থেকে প্রচুর দামি জিনিস লুট করার অভিযোগ ছিল তাঁদের নামে। সেই ঘটনায় তিনজনই গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং পরে জামিন পান।
এর পর ২০০৪ সালে বালেশ এবং তাঁর ভাই সুন্দর লাল রাজেশকে খুন করেন বলে অভিযোগ। খুন করে রাজেশের দেহ দিল্লির বাইরে ফেলে দিয়ে আসে। এই সব অপরাধের ঘটনা থেকেই নিজের নাম সরাতে নিজের মৃত্যুর মিথ্যা গল্প ফাঁদে বালেশ। দুই শ্রমিককে লরির মধ্যে মেরে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। সকলে মনে করেন মৃতদের মধ্যে এক জন বালেশ। এমনকি তাঁর বালেশের বাবাও সেই দেহ বালেশের বলে সনাক্ত করেছিল। এর পর নজফগড়েই থাকছিলেন তিনি। নিজের নামও পরিবর্তন করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীও থাকতেন। বালেশকে গ্রেফতার করলেও তাঁর স্ত্রী এখন পলাতক। তাঁরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।