নয়া দিল্লি: কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা, বা দু-পক্ষের মধ্যে অশান্তি নিয়ে গত বছর হিংসার আগুন ছড়ায়নি রাজধানীতে। বরং দাঙ্গা (Delhi Riots) লাগানোর পরিকল্পনা আগে থেকেই করা হয়েছিল। পুরোটাই ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। রীতিমতো হিসেব কষে এই হিংসার আগুন ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল রাজধানীর বুকে। মঙ্গলবার এই সম্পর্কিত এক মামলার শুনানি চলাকালীন এমনই কড়া পর্যবেক্ষণ করতে শোনা যায় দিল্লি হাইকোর্টকে (Delhi High Court)।
লাগাতার তিন দিন ধরে চলা এই হিংসায় কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ২০০-র বেশি মানুষ। সেই নিয়েই এক মামলার শুনানি চলছিল। যখন আদালত বলে, ২০২০ সালের দাঙ্গা একটা ষড়যন্ত্রের অংশ, আগে থেকে পরিকল্পিত, এবং সেই মতো রূপ দেওয়া হয়। এক লহমার কোনও ঘটনায় এটা হয়ে যায়নি। আদালতে প্রমাণ হিসেবে জমা পড়া ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে আদালত জানায়, বিক্ষোভকারীদের আচরণ থেকেই এটা স্পষ্ট যে অশান্তির মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত এবং সরকারকে অস্থির করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রহ্মনিয়ান প্রসাদ নিজের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, “একের পর এক সিসিটিভি ক্যামেরা যেভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল, তাতে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে শহরের আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করা হয়। একই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট হয়েছে যে অসংখ্যা দাঙ্গাকারী নির্মমভাবে লাঠিসোটা, ডান্ডা, ব্যাট ইত্যাদি নিয়ে পুলিশ আধিকারিকদের উপর হামলা চালায়।”
ঘটনা হচ্ছে, দিল্লিতে হিংসার মামলায় গ্রেফতার হওয়া দুই অভিযুক্তের জামিনের শুনানির আবেদন এ দিন আদালতে চলছিল। মহম্মদ ইব্রাহিম ও মহম্মদ সলিম খান নামের দুই অভিযুক্ত জামিনের আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু উপরিউক্ত যুক্তিগুলি দেখিয়ে আজ সেই জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। হাইকোর্ট সাফ জানিয়েছে, ‘ব্যক্তি স্বাধীনতা’ কখনই সভ্য সমাজের স্থিতিশীলতায় ব্যাঘাত ঘটানোর অনুমতি দেয় না। সিসিটিভি ফুটেজে ইব্রাহিমকে একটি তলোয়ার উঁচিয়ে হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে। তাই জামিনের কোনও প্রশ্নই নেই বলে সাফ জানিয়েছে আদালত।
দিল্লির হিংসায় মৃত পুলিশের হেড কনস্টেবল রতন লালের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তের তালিকায় নাম ছিল ইব্রাহিমের। যদিও তাঁর জামিনের আবেদন জানিয়ে পাল্টা যুক্তি দিয়ে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই কনস্টেবলের মৃত্যু তলোয়ারের আঘাতে হয়নি। অন্যদিকে, ইব্রাহিম দাবি করে যে পরিবারের সুরক্ষার জন্যই সে তলোয়ার হাতে তুলে নিয়েছিল। কিন্তু আদালত সে সমস্ত যুক্তি রীতিমতো খারিজ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: School Reopening: ‘নিউ নর্মালে’ কেমন হবে স্কুলের পাঠ? রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতনের উদাহরণ দিল ICMR