নয়া দিল্লি: ফের, দিল্লি হাইকোর্টে ধাক্কা খেল কংগ্রেস। চার বছরের জন্য কংগ্রেসের আয়করের পুনঃমূল্যায়ন করার আদেশ দিয়েছে আয়কর বিভাগ। আয়কর বিভাগের এই আদেশকেই হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেস অভিযোগ করেছিল, আয়কর বিভাগ আদালতের শুনানির ফলাফলের জন্য অপেক্ষা না করেই আইন প্রয়োগ করেছে। কংগ্রেসের অ্যাকাউন্টে থাকা কিছু টাকা ভাঙিয়েছে তারা। এই অবস্থায় কংগ্রেস চেয়েছিল, স্থগিতাদেশের আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আয়কর বিভাগকে যেন আর কোনও পদক্ষেপ করতে না দেওয়া হয়। কিন্তু, সেই আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা এবং বিচারপতি পুরুষৈন্দ্র কুমার কৌরবের বেঞ্চ জানিয়েছে, জারি থাকবে আয়কর দফতরের পদক্ষেপ। প্রসঙ্গত, আয়করে গড়মিলের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, কংগ্রেসের গত কয়েক বছরের আয়করের সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়কর দফতর।
এর আগে ২২ মার্চ, কংগ্রেসের একই ধরনের আরও একটি আবেদন খারিজ করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। ওই দিন কংগ্রেসের আবেদন ছিল ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ বছরগুলির জন্য আয়কর রিটার্ন পুনর্মূল্যআয়ন সংক্রান্ত। এদিনের আবেদন ছিল ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১-এর জন্য। তার আগে, ১৩ মার্চ, কংগ্রেসের কাছ থেকে বকেয়া ট্যাক্স হিসাবে প্রায় ১০৫ কোটি টাকা পুনরুদ্ধারের জন্য আয়কর দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দিতেও অস্বীকার করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। ইনকাম ট্যাক্স আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ বহাল রেখেছিল আদালত। বিচারপতি যশবন্ত ভার্মা এবং বিচারপতি পুরুষৈন্দ্র কুমার কৌরব জানিয়েছিলেন, ইনকাম ট্যাক্স আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশে নাক গলানোর কোনও প্রয়োজন নেই। তবে কংগ্রেস দলকে, এই আদেশ স্থগিত করার জন্য আইট্যাটের কাছে নতুন করে আবেদন করার অনুমতি দিয়েছিল আদালত।
কংগ্রেসের দাবি, সরকারি যন্ত্রকে ব্যবহার করে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধান বিরোধী দলকে আর্থিকভাবে ‘পঙ্গু’ করে দিতে চাইছে বিজেপি। সাম্প্রতিক এক সাংবাদিক সম্মেলনে সনিয়া গান্ধী দাবি করেছেন, দলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে জোর করে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “এই সমস্যা শুধু কংগ্রেসের ক্ষতি করছে না। এটা আমাদের গণতন্ত্রের ক্ষতি করছে। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি নিয়মতান্ত্রিক চেষ্টা চালাচ্ছেন। জনসাধারণের কাছ থেকে সংগৃহীত তহবিল ফ্রিজ করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের অ্যাকাউন্ট থেকে জোর করে অর্থ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।” কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও একই সুরে অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস যাতে বিজেপির সমান শক্তি নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি ফ্রিজ করা হয়েছে। রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, তাঁরা প্রচারের কাজ করতে পারছেন না। তাঁদের নেতাদের ট্রেনে করেও দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। হাইকোর্টে বারংবার ধাক্কা খাওয়ার পর এবার কোন পথে যাবেন কংগ্রেস নেতারা?