নয়া দিল্লি: রাজধানীর বাতাসে দূষণের (Delhi Air Pollution) মাত্রা আগের থেকে কিছুটা উন্নত হয়েছে। কিন্তু এখনও তা যথেষ্টই খারাপ। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির সমস্ত স্কুলগুলি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেজরিওয়ালের সরকার (Delhi Government)। দিল্লি সরকারের ডিরেক্টকরেট অব এডুকেশনের তরফে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত রাজধানীর সব স্কুলে সশরীরে উপস্থিতি বন্ধ রাখা হবে। তবে অনলাইনে পঠনপাঠন প্রক্রিয়া আগের মতোই চালু থাকবে।
বাইরে বের হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হচ্ছে চোখ জ্বালা। বেশি সময় খোলা জায়গায় থাকলেই শুরু হচ্ছে কাশি, যা আর থামতেই চাইছে না। চিকিৎসকের কাছে গেলেই ধরা পড়ছে ফুসফুসের জটিল রোগ। বিষাক্ত বাতাসে দিল্লিবাসীর বর্তমান হাল এমনটাই।
বায়ুদূষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ প্রকাশ করার পরই রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার নানা পদক্ষেপ করলেও সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা বলছে অন্য কথা। পেটের টানে যাদের নিত্যদিন বাইরে বের হতে হয়, তাদের কাছে গা সওয়া হয়ে গিয়েছে এই দূষণ। শীতকাল আসলেই বিষাক্ত বাতাসের চাদরে ঢাকা পড়ে যায় গোটা দিল্লি।
দীপাবলির পর থেকেই দিল্লি ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে দূষণ চরম মাত্রায় পৌঁছয়। বিগত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সেই দূষণের রেশই জারি রয়েছে। দীপাবলি উপলক্ষ্যে রাজধানী ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলি জুড়ে যে ব্যাপক পরিমাণে বাজি পোড়ানো হয়েছিল, তার জেরেই টানা চার-পাঁচদিন ধরে বাতাসের গড় গুণমান “বিপজ্জনক” পর্যায়েই ঘোরাফেরা করছে। এছাড়াও ক্ষেতে ফসলের অবশিষ্ট অংশ পোড়ানো থেকেও ব্যাপক পরিমাণে বায়ু দূষণ হয়েছে। গাড়ি ও শিল্পাঞ্চল থেকে দূষণ তো লেগেই রয়েছে।
দূষণ বাড়তেই হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিতেও রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে। অধিকাংশ রোগীরই ফুসফুসে প্রদাহ বা শ্বাসযন্ত্রে গুরুতর কোনও রোগ ধরা পড়ছে। চিকিৎসককে দেখাতে আসা এক রোগী বলেন, “জানিনা কবে দিল্লির দূষণ রুখতে স্থায়ী সমাধান বের করা হবে। আমরা একটা গ্যাস চেম্বারের মধ্যে রয়েছি মনে হচ্ছে, যেখানে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছি আমরা সবাই।”
চলতি সপ্তাহেই এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের তরফে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক নির্দেশিকা জারি করা হয়। এরমধ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল, কলেজ বন্ধ, সরকারি কর্মীদের ওয়ার্ক ফ্রম হোমের সুযোগ দেওয়া, ট্রাক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সহ একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিল্লি ছাড়াও হরিয়ানা, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ সরকারকেও এই নির্দেশগুলি মানতে হবে বলে জানানো হয়েছে। উল্লেখিত প্রত্যেকটি রাজ্য সরকারকে আগামী ২২ নভেম্বরের মধ্যে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: G D Birla School Agitation: ‘চাকরিতে ফেরান, বকেয়া দিন’, জিডি বিড়লায় আবারও ব্যাপক বিক্ষোভ