নয়া দিল্লি: অল্পের জন্য বড় নাশকতার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পেল মুম্বই ও সুরাট। চলতি মাসেই গ্রেফতার হওয়া পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের জেরায় জানা গিয়েছে, জঙ্গিহানার প্রথম টার্গেটই ছিল মহারাষ্ট্র ও গুজরাট। এই দুই রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র মুম্বই ও সুরাটে বড়সড় হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের।
চলতি মাসের ১৪ তারিখ দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের (Delhi Police Special Cell) তৎপরতায় দিল্লি, রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশ থেকে মোট ছয়জনকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়। পরে মুম্বই থেকেও আরডিএক্স সহ এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের লাগাতার জেরায় প্রতিবারই উঠে আসছে একের পর এক নতুন তথ্য।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত জঙ্গি জিশান সম্প্রতিই সুরাটে গিয়েছিল পরিস্থিতি পর্য়বেক্ষণ ও হামলার জায়গা রেইকি করতে। তাঁরই এক সঙ্গী গিয়েছিল মুম্বইতে। চলতি মাসেই এই দুই জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। একইসঙ্গে বিহারের পটনাতেও পাশ্ববর্তী হাজিপুরের সঙ্গে সংযোগকারী মহাত্মা গান্ধী সেতুতে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জিশান ও অপর এক জঙ্গি গত এপ্রিল মাসে ওমানের মসকটে পালিয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে বোটে করে তাঁরা পাকিস্তানে যায়। সেখানে ওই দু’জন জঙ্গিকে ১৫ দিন একটি বাগানবাড়িতে রেখে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং কীভাবে দেশে ফিরে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিতে হয়, সেই শিক্ষাও দেওয়া হয়। এরপর প্রশিক্ষণ শেষ হলে ফের দুবাইয়ের পথ ধরেই ভারতে ফিরে আসে ওই দুজন।
মহারাষ্ট্র এটিএস বাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, গণেশ উৎসবের সময়ই হামলা চালানোর ছক ছিল। জান মহম্মদ নামক ধৃত এক জঙ্গি সেি কারণে পুজোর আগেই মুম্বই গিয়েছিল রেইকি করতে। অন্যদিকে, দিল্লি পুলিশ সূত্রেও জানা গিয়েছে, জিশান জেরায় তাদের এক প্রশিক্ষকের শনাক্তকরণ করেছে। জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তি পাকিস্তান সেনা বাহিনীর কর্নেল।
পুলিশি জেরায় আগেই জানা গিয়েছিল যে, সীমান্তের ওপার থেকেই এই হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল এবং গোটা বিষয়ের উপর কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছিল। মোট দুটি দল দেশে নাশকতার ছক কষছিল, এদের মধ্যে একটি দলের পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন দাউদ ইব্রাহিম(Dawood Ibrahim)-র ভাই আনিস ইব্রাহিম। ধৃত জঙ্গি জান মহম্মদের সঙ্গে দাউদ ইব্রাহিমের ভাই আনিস ইব্রাহিম ও আইএসআই সংগঠনের সরাসরি যোগ রয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দা সূত্রে।
হামলা চালানোর জন্য যে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা হাওয়ালার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছিল বলেও জানা গিয়েছে। ধৃতদের মধ্যে ইব্রাহিম নামক এক ব্যক্তি রয়েছে, যার প্রধান কাজই ছিল জঙ্গি হামলার জন্য তহবিল জোগান দেওয়া। হাওয়ালার মাধ্যমে সেই টাকা জোগাড় করা হচ্ছিল। লালা নামক অপর ধৃত আদতে একজন আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী হিসাবে কাজ করত। লালাই উত্তর প্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রে বোমা বিস্ফোরণ করতে চেয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।