নয়া দিল্লি: শিশুদের টিকাকরণের দৌড়ে এ বার নাম লেখাল সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া (Serum Institute)। মঙ্গলবারই কেন্দ্রের কাছ থেকে কোভোভ্যাক্স(Covovax)-র দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার ট্রায়াল চালানোর অনুমতি পেল বিশ্বের বৃহত্তম টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থা। ৭ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের উপর এই করোনা টিকার ট্রায়াল চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
মার্কিন বায়োটেকনোলজি সংস্থা নোভাভ্যাক্স(Novavax)-র সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টায় দ্বিতীয় করোনা টিকা আনতে চলেছে সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া। এটিই দেশের তৃতীয় টিকা হতে চলেছে, যা শিশুদের উপর পরীক্ষামূলক ট্রায়াল শুরু করেছে। এর আগে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন ও জ়াইডাস ক্যাডিলার জ়াইকোভ-ডি ভ্যাকসিনেরও ট্রায়াল শুরু হয়েছে শিশুদের উপর।
গতকালই বিশেষজ্ঞ কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, ৭ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের উপর কোভোভ্যাক্সের টিকার ট্রায়াল চালানোর অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। নির্দিষ্ট প্রোটোেকল অনুযায়ী এ বার সেরাম সংস্থা স্বেচ্ছাসেবকদের বেছে নিতে পারবে।
করোনা সংক্রমণের জেরে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রের সমস্ত স্কুল-কলেজ। ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্যেই স্কুল খুলে গেলেও বাচ্চাদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে, এই কারণেই দ্রুত শিশুদোরও করোনা টিকাকরণ শুরু করতে চায় কেন্দ্র।
এর আগে জুলাই মাসে কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ কমিটি সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়াকে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের উপর টিকার ট্রায়াল চালানোর অনুমোদন দিয়েছিল। বর্তমানে সেই ট্রায়াল চলছে। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে ৭ থেকে ১১ বছর বয়সীদেরও ট্রায়াল শুরু করা হচ্ছে।
সম্প্রতিই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে একটি বৈঠকে সেরাম কর্তা আদার পুনাওয়ালা জানিয়েছিলেন অক্টোবর মাসেই বাজারে কোভোভ্যাক্সের দুই ডোজ়ের করোনা টিকা আনা হবে। ডিসিজিআইয়ের অনুমোদন মিললেই আপাতত ১৮ উর্ধ্বদের টিকাকরণ শুরু করা হবে। আগামী বছরের প্রথম ভাগের মধ্যে শিশুদের টিকা উৎপাদনও শুরু হবে বলেই তিনি আশাবাদী বলে জানান।
গত বছরের অগস্ট মাসেই মার্কিন বায়োটেকনোলজি সংস্থার সঙ্গে লািসেন্স চুক্তি করে সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া। এরপরই দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে প্রোটিন ভিত্তিক করোনা টিকা উৎপাদন শুরু হয়। প্রথম ঠিক করা হয়েছিল ১০০ কোটি টিকা উৎপাদন করা হবে, পরে সেই সিদ্ধান্ত বদলে ২০০ কোটি টিকা উৎপাদনের চুক্তি হয়।
চলতি বছরের মে মাস থেকে দেশে সেরাম সংস্থা কোভোভ্যাক্স টিকা উৎপাদন শুরু করে। তবে সংস্থার তরফে জানানো হয়নি এখনও অবধি কত টিকা তারা উৎপাদন করেছে। কোভোভ্যাক্সের পাশাপাশি কোভিশিল্ডের উৎপাদনও বাড়ানো হয়েছে। প্রতি মাসে কয়েক কোটি টিকা উৎপাদন করা হচ্ছে।
কোভিশিল্ডের মতো কোভোভ্যাক্সও নিমেন ও মধ্য আয়যুক্ত দেশগুলিতে কোভ্য়াক্সের অধীনে সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। গতমাসেই নোভাভ্যাক্সের তরফে জানানো হয়, তাদের তৈরি করোনা টিকা ১০০ শতাংশ সুরক্ষা দিতে পারে করোনার মাঝারি বা ভয়ঙ্কর সংক্রমণের ক্ষেত্রে। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই টিকার কার্যকারিতা ৯০.৪ শতাংশ।