চণ্ডীগঢ়: দলের অবস্থা টলোমলো। একের পর এক শীর্ষ নেতা-মন্ত্রী দিচ্ছেন ইস্তফা। এই সঙ্কট পরিস্থিতি সামাল দিতেই বুধবার ক্যাবিনেট বৈঠকের ডাক দিলেন পঞ্জাবের নয়া মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি (Charanjit Singh Channi)। বিগত এক মাস ধরে পঞ্জাব (Punjab) কংগ্রেসে যে টানাপোড়েন চলছে, তাতেই নতুন মোড় এসেছে গতকাল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে নভজ্যোত সিং সিধু(Navjot Singh Sidhu)-র ইস্তফার পর। আগামিদিনে দল কেন পথে এগোবে, তা ঠিক করতেই এদিনের বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
দীর্ঘদিন ধরে নভজ্যোত সিং সিধুর সঙ্গে মনোমালিন্য চলার পর গত সপ্তাহেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং (Amarinder Singh)। নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নভজ্যোত সিং সিধুকে বেছে নেওয়া হবে বলে মনে করা হলেও শেষমুহূর্তে শীর্ষ নেতৃত্ব স্থির করে, সিধু নন, মুখ্যমন্ত্রী হবেন চরণজিৎ সিং চন্নি।
সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী পদ না পাওয়ায় অসন্তুষ্ট হয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। সম্প্রতি পঞ্জাবের মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণেও সিধুর পছন্দ মতো বেশ কয়েকজন নেতাকে জায়গা না দেওয়াতেই ক্ষোভ চরমে ওঠে এবং মঙ্গলবার তিনি পঞ্জাবের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন। তবে কংগ্রেস ছাড়ছেন না তিনি, একথাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
গতকালই সনিয়া গান্ধীর কাছে লেখা চিঠিটি টুইটারে পোস্ট করেন নভজ্যোত সিং সিধু। প্রদেশ সভাপতির পদে ইস্তফাপত্রে তিনি লেখেন, “আমি পঞ্জাবের ভবিষ্যৎ এবং পঞ্জাবের উন্নয়নের সঙ্গে কোনওদিন আপস করতে পারব না। আর সেই কারণেই আমি পঞ্জাব কংগ্রেসের সভাপতি পদে ইস্তফা দিচ্ছি। আগামী দিনে আমি কংগ্রেসের হয়ে একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে যাব।”
এদিকে, সিধুর ইস্তফার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পঞ্জাবের মন্ত্রিসভার সদস্য রাজ়িয়া সুলতানাও নিজের মন্ত্রিত্ব ছাড়েন। সিধু ঘনিষ্ট হিসাবে পরিচিত রাজ়িয়ার বক্তব্য, “নভজ্যোতের মতো মানুষ হয় না। তিনি অত্যন্ত নীতিবান। পঞ্জাবের জন্য লড়াই করে এসেছেন।” সিধুর এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াতেই মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন বলে জানান রাজ়িয়া।রাজ়িয়ার ইস্তফার ঘণ্টা খানেক যেতে না যেতেই ফের চমক। এ বার বেঁকে বসেন যোগীন্দর পাল ধিংরাও। পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন ধিংরা। তাঁরও বক্তব্য একই। সিধুর পাশে দাঁড়াতেই তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানান। গুলজ়ার ইন্দর চাহালও দলের কোষাধক্ষ্য ও গৌতম শেঠ রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (প্রশিক্ষণ বিভাগের) পদ থেকে ইস্তফা দেন।
এদিকে, সিধুর ইস্তফার পরই তাঁকে কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে কটাক্ষ করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। টুিট করে পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “আমি আপনাদের আগেই বলেছিলাম…উনি (নভজ্যোত সিং সিধু) একেবারেই সুস্থির নন। আর পঞ্জাবের মতো সীমান্তবর্তী একটি রাজ্যের দায়িত্ব সামলানোর জন্য তিনি একেবারেই মানানসই নন।”
আরও পড়ুন: Kanhaiya Kumar: ‘কংগ্রেস ছাড়া দেশ অচল’, নতুন দলে এসেই ‘জাহাজ’ বাঁচানোর আর্জি কানহাইয়ার