Delhi Air Pollution: উত্তুরে হাওয়া ঢুকতেই মিলল স্বস্তি, অবশেষে ‘খারাপ’ পর্যায়ে নামল দিল্লির বাতাস
Delhi Air Quality Improves to Poor: আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার ২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং সোমবার প্রতি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়েছিল, সেই কারণেই দিল্লির বাতাসের গুণমানে উন্নতি হয়েছে।
নয়া দিল্লি: অবশেষে স্বস্তি পেল দিল্লিবাসী। চলতি মাসের শুরু থেকে বায়ুদূষণের (Air Pollution) কারণে যেভাবে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছিল বাসিন্দাদের, সেই বিষাক্ত বাতাসেই ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। বুধবার সকালে দিল্লির বাতাসে গুণমান (Air Quality Index) ছিল ২৮০, যা “খারাপ” পর্যায়ে পড়ে। তবে দীপাবলির পর থেকেই “বিপজ্জনক” থেকে “অতি খারাপ” পর্য়ায়ে ঘোরাফেরা করছিল দিল্লির বাতাস, সেই তুলনায় আজকের বাতাস তুলনামূলকভাবে অনেকটাই ভাল।
তবে বাতাসের গুণমান উন্নতির কারণ দূষণের মাত্রা কমা নয়, বরং উত্তুরে হাওয়ার প্রভাবেই বাতাসের এই উন্নতি হয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, রবিবার ২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা এবং সোমবার প্রতি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়েছিল, সেই কারণেই দিল্লির বাতাসের গুণমানে উন্নতি হয়েছে।
রবিবার ও সোমবারে হাওয়া বইলেও ওই দুইদিন বাতাসের গুণমান অতি খারাপ পর্যায়েই ছিল, কারণ ২৪ ঘণ্টার গড় হিসাবে বাতাসের গুণমান নির্ণয় করা হয়। সেই কারণেই আগেরদিনের দূষণের প্রভাবে বাতাসে উন্নতি ধরা পড়েনি। বায়ুর গুণমান পরীক্ষা করার সংস্থা সফর (SAFAR)-র তরফে জানানো হয়েছে, আগামী কয়েকদিনে বাতাসের অভিমুখ উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে পরিবর্তিত হওয়ায় বাতাসের গুণমানে আরও উন্নতি হবে, তবে তা “খারাপ” পর্যায়েই থাকবে।
শুধু দিল্লিই নয়, পার্শ্ববর্তী ফরিদাবাদে বাতাসের গুণমান ছিল ২৭৯, গাজিয়াবাদে ২৬৮, গ্রেটার নয়ডায় ২৫৫, গুরগাঁওতে ২৭৬ এবং নয়ডায় বাতাসের গুণমাণ ২৫২ ছিল। আগামী তিনদিনও বাতাসের গুণমান খারাপ পর্যায়েই থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া ও গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
উল্লেখ্য, বায়ু মান সূচকের মান শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তাকে “ভাল” পর্যায়ে রাখা হয়, যা শ্বাস নেওয়ার পক্ষে ভাল। ৫১-১০০ হলে তা “মাঝারি” পর্যায়ে রাখা হয়। ১০১-১৫০ হলে তা খারাপ হিসাবেই গণ্য করা হয়। যাঁদের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের পক্ষে এই বাতাস অস্বাস্থ্যকর বলেই গণ্য করা হয়। বায়ু মান সূচক ১৫১-২০০ হলে তাকে “অস্বাস্থ্যকর” বা “খারাপ” পর্যায়ে রাখা হয়, যা সকলের পক্ষেই অস্বাস্থ্যকর। সূচক ২০১-৩০০ হলে, তাকে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসাবে গণ্য করা হয়। ৩০১-৫০০ হলে সেই বাতাসকে বিপজ্জনক হিসাবে গণ্য করা হয়।
বায়ু দূষণ থেকে লড়তে গত সপ্তাহেই রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, দূষণ না কমা অবধি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে দিল্লির সমস্ত স্কুল। দিল্লি সরকারের ডিরেক্টকরেট অব এডুকেশনের তরফে জানানো হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত রাজধানীর সব স্কুলে সশরীরে উপস্থিতি বন্ধ রাখা হবে। তবে অনলাইনে পঠনপাঠন প্রক্রিয়া আগের মতোই চালু থাকবে। বন্ধ থাকবে কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও।
সরকারি অফিসের কর্মচারীদের জন্যও আগামী ২৬ নভেম্বর অবধি বাড়ি থেকে কাজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহন ছাড়া বাকি সমস্ত ট্রাকের প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে এই নতুন নির্দেশিকায় নির্মাণকাজও বন্ধ থাকবে কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি।
দিল্লির পরিবেশ দফতরের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, দীপাবলির পর থেকে যে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে বায়ুদূষণ, তাতে কয়েক সপ্তাহ পরও উন্নতি না হওয়ায় যান চলাচলে আরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। যেহেতু গাড়ি থেকে নির্গত দূষিত কণা বায়ুকে আরও বিষিয়ে তোলে, সেই কারণে জোড়-বিজোড় পদ্ধতি ছাড়াও অন্য কোনও বিকল্প পরিকল্পনা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় ও জরুরি পরিষেবা ছাড়া দিল্লির সরকারি, কর্পোরেশন অফিসগুলি বন্ধ থাকবে ২৬ নভেম্বর অবধি। কর্মচারীরা বাড়ি থেকেই কাজ করবেন। বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও একই নিয়ম অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।