নয়া দিল্লি: ২০২১ সালের সারোগেসি আইনে, সারোগেসির জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের জন্য নির্ধারিত বয়স ২৩ থেকে ৫০ বছর এবং পুরুষের জন্য ২৬ থেকে ৫৫ বছর। সারোগেসির আইনে বেঁধে দেওয়া এই বয়সের ঊর্ধ্ব সীমাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করা হয়েছে। এই মামলার রায় ঘোষণা না করলেও, মঙ্গলবার মৌখিক পর্যবেক্ষণে এই আবেদনের বিরোধিতাই করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি উজ্জল ভুঁইঞার বেঞ্চ জানিয়েছে, বয়স ষাট পার করলে, শিশুর জন্ম দেওয়া এবং তাকে মানুষ করা অত্যন্ত কঠিন।
বিচারপতি নাগারত্ন তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছেন, “অনেক ক্ষেত্রে যাদের বয়স ষাটের ঘরে, তাঁরাও সন্তান চাইছেন। এই বয়সে কোনও শিশুকে লালন-পালন করা খুব কঠিন। সকলেই জানে, কোনও শিশু একবার হাঁটা শুরু করলে, তাকে চোখে চোখে রাখাটা কতটা কঠিন। এর জন্যই দত্তক আইনেও দত্তক নেওয়ার জন্য সম্মিলিত বয়সের একটি সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বয়স ষাট পেরোলে সন্তান ধারণ করা খুবই কঠিন। শিশুটি তাদের বাবা-মা বলবে না দাদু-দিদা বলবে, বুঝতে পারে না। আমাদের বিষয়টি সন্তানের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। বেশি বয়সের বাবা-মায়েরা সন্তানের দেখাশোনা করতে সক্ষম কিনা, তা বিবেচনা করতে হবে। কোনও শিশুকে এই পৃথিবীতে আনা খুব সহজ,কিন্তু তাকে লালন-পালন করা, তাকে পড়াশোনা করানো সহজ নয়। শিশুর অধিকারের বিষয়টিও ভাবতে হবে। ৩০ বা ৪০ ঘরে বয়স যে সকল সাধারণ মানুষের, তারাও ওই বয়সে এই পৃথিবীতে কোনও শিশুকে আনার আগে একশোবার ভাবে।”
সারোগেসি আইনে বেঁধে দেওয়া বয়সের ঊর্ধ্বসীমাকে চ্যালেঞ্জ করা নিয়ে বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, ‘সব কিছুকেই কি চ্যালেঞ্জ করতে হবে? এর (বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া) পিছনে একটা উদ্দেশ্য আছে তো।’ জবাবে আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতকে জানান, যাঁরা এই আবেদন নিয়ে আদালতে এসেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই এই বয়সে সন্তান লাভের জন্য মরিয়া। আর সেই কারণেই বয়সের ঊর্ধ্বসীমাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন তাঁরা। বিচারপতি তাঁদের সন্তান দত্তক নেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘তাঁরা তো দত্তক নিতেও পারেন। সেই সুযোগ সবসময় ছিল। শুরুতেই যখন তাঁরা গর্ভধারণ করতে পারবেন না বলে জানতে পেরেছিলেন, তখনই কাউকে দত্তক নিতে পারতেন। দত্তক নেওয়া আজকাল সমাজও ভালভাবে গ্রহণ করে। এমনকি অবিবাহিত মহিলারাও এখন দত্তক নিচ্ছেন।’