নয়া দিল্লি: মহুয়া মৈত্রকে তাঁর সরকারি বাংলো থেকে উৎখাত করতে, শুক্রবার সকাল-সকালই তাঁর বাংলোয় এসে পৌঁছল কেন্দ্রীয় সরকারের একটি দল। এদিনই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর তাঁর সরকারি বাংলো খালি করে দেওয়ার কথা। ‘অনৈতিক আচরণ’-এর দায়ে, গত মাসে তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এরপর, চলতি সপ্তাহের শুরুতে তাঁকে উচ্ছেদের নোটিস পাঠিয়েছিল সরকার। নোটিশে তাঁকে বাংলোটি অবিলম্বে খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ডিরেক্টরেট অব এস্টেটের পাঠানো সেই নোটিসে, কড়া ভাষায় জানানো হয়েছিল, মহুয়া মৈত্র যদি নিজে থেকে বাংলো খালি করে না দেন, তাহলে তাঁকে ওই প্রাঙ্গণ থেকে উচ্ছেদ করা হবে। প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করা হবে বলেও জানানো হয়।
ডিরেক্টরেট অব এস্টেটের দল মহুয়ার বাংলোয় আসার আগেই অবশ্য তিনি বাংলো খালি করে দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁর আইনজীবী। তিনি জানিয়েছেন, টেলিগ্রাফ লেনের ৯বি বাংলোটি মহুয়া মৈত্রর দখলে ছিল। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ কেন্দ্রীয় সরকারের দল এসেছিল সেখানে। তার আগেই বাংলোটি খালি কর দেওয়া হয়েছিল। কাজেই তাঁকে উচ্ছেদ করতে হয়নি।
এই সরকারি নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন মহুয়া। কিন্তু, বৃহস্পতিবারই তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল আদালত। তবে, মহুয়া মৈত্র বর্তমানে নয়া দিল্লির মেদান্ত হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন বলে আদালতে জানান তাঁর আইনজীবী। তাঁর দিল্লিতে অন্য কোনও বাড়িও নেই। এই পরিস্থিতিতে একাকী মহিলা হিসাবে তাঁকে যাতে গৃহচ্যুত না করা হয়, এমনই আবেদন করেছিলেন জানান মহুয়ার আইনজীবী। বাংলো ছাড়ার জন্য মাস চারেক সময় চেয়েছিলেন। ওই সময়কালে বাংলোর ভাড়া দিতেও রাজি ছিলেন। কিন্তু আদালত কোনও কথাই শোনেনি। বিচারপতি জানান, সরকারি বাংলোর বিষয়ে রায় দেওয়ার অধিকার নেই আদালতের। তিনি আরও জানান, চার মাসের বদলে মহুয়া যদি ৩-৪ দিন বা এক সপ্তাহ সময় চাইতেন, তাহলে আদালত বিষয়টি বিবেচনা করতে পারত।
মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে শিল্পপতি দর্শন হিরানন্দানির কাছ থেকে মূল্যবান উপহার গ্রহণ করে, তাঁর ব্যবসায়িক শত্রু, শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দাশ। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে লোকসভার এথিক্স কমিটি একটি তদন্ত করেছিল। এথিক্স কমিটি লোকসভায় জানিয়েছিল, মহুয়া মৈত্র দর্শন হিরানন্দানির সঙ্গ তাঁর লোকসভার ইমেইলের লগইন বিশদ ভাগ করে নিয়েছিলেন। বিদেশ থেকেও তাঁর প্রোফাইলে লগইন করা হয়েছিল। এর ফলে, জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছিল। তাই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। লোকসভা এই রিপোর্টটি গ্রহণ করে এবং ৮ ডিসেম্বর লোকসভা থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।