কলকাতা: শুধু দেশের মধ্যেই নয়, সমগ্র এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে সেরার তকমা পেল কলকাতা বিমানবন্দর (Dumdum Airport)। মূলত, করোনাকালে স্বচ্ছতা, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার নিরিখে এশিয়ার সেরা বিমানবন্দরের সম্মান পেল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। মার্কিন সংস্থা এয়ারপোর্টস কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল বা এসিআই-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এই তথ্য সামনে এসেছে। একইসঙ্গে পুণে ও চণ্ডীগড় বিমানবন্দরও এই সেরার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
দমদম বিমানবন্দরের ডিরেক্টর কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, এসিআই-এর তরফ থেকে আগেও দমদম বিমানবন্দর বিভিন্ন সম্মান পেলেও করোনাকালে এই সম্মান অত্যন্ত গর্বের। এর থেকেই স্পষ্ট দমদম বিমানবন্দর জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অন্য অনেক বিমানবন্দরের তুলনায় ভাল কাজ করেছে। সেই কারণেই এই ক্ষেত্রে ৫-এর মানদণ্ডের মধ্যে ৪.৯৯ পেয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর।
যদিও ভারত থেকে কলকাতার পাশাপাশি পুণে ও চণ্ডীগড় এই দুই বিমানবন্দর এই স্বচ্ছ বিমানবন্দরের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। উল্লেখ্য, এই তিন বিমানবন্দরই বর্তমানে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া দ্বারা পরিচালিত। অর্থাৎ এই তিন বিমানবন্দর এখনও সরকারি হাতেই রয়েছে। কৌশিকবাবু জানান, গত জুন মাসে লকডাউনের পর যখন ফের উড়ান পরিষেবা চালু হয় তখন থেকেই যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। যাত্রীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে কড়া নজর রাখা হয়েছিল। কার্যত প্রতি কাজের জন্য নির্দিষ্ট লোক নিয়োগ করার পাশাপাশি, স্বচ্ছতা ও পরিচ্ছন্নতার দিকে নিরবচ্ছিন্ন নজর রাখার কারণেই এই সম্মান।
তিনি বলেন, “সেই সময় প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর সবকিছু পরিস্কার করা। যাত্রীদের মধ্যে দুরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার-সহ সুরক্ষাবিধির সব নিয়ম কড়াভাবে লাগু করা হয়েছিল।” করোনাবিধি মেনে যাত্রীদের ব্যাগ, জামাকাপড় স্যানিটাইজেশন করা এবং প্রবেশ থেকে বিমানে ওঠা পর্যন্ত সবকিছুই স্পর্শবিহীন অর্থাৎ কন্টাক্টলেস করা হয়েছিল, জানান কৌশিকবাবু।
করোনার সময় একাধিকবার ইন্দোর ও মুম্বই থেকে কাজের সূত্রে কলকাতায় আসতে হয়েছে কল্লোল দাশগুপ্তকে। তিনি বলেন, “দেশের অন্য বৃহৎ বিমানবন্দরগুলি করোনার সময়ে স্বচ্ছতা ও পরিচ্ছন্নতা বজায়ে যে পদক্ষেপ করেছিল, তার চেয়ে অনেক ভাল ও কড়া ব্যবস্থা চালু ছিল কলকাতায়। যা অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং যাত্রীবান্ধব। সেই ভাল কাজের সম্মানই অবশেষে মিলল কলকাতা বিমানবন্দরের।”
যদিও কৌশিকবাবু এই সাফল্যকে কারও একার কৃতিত্ব বলে মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, “এই সম্মান আমাদের সকলের। পুরো দল হিসেবে করোনার সময় থেকে আমরা কাজ করেছি। নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে কড়াভাবে সব নিয়ম পালন করা হয়েছে। তার ফলস্বরূপ এই আন্তর্জাতিক সম্মান। যা অত্যন্ত গর্বের বিষয়।”
প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই এসিআই একটি স্বাধীন সংস্থা। প্রতি বছর বিভিন্ন বিভাগে বিশ্বের মধ্যে সেরা বিমানবন্দরগুলিকে এই সংস্থা স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। কিন্তু করোনার বছরে স্বচ্ছতা, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার নিরিখে সেরা বিমানবন্দরের সম্মান পেয়েছে দমদম। একইসঙ্গে এই তালিকায় রয়েছে পুণে ও চণ্ডীগড়। ভারতের এই তিন বিমানবন্দর ছাড়া এশিয়া প্যাসিফিক এলাকার সেরার তালিকায় রয়েছে চিনের বেজিং, ইন্দোনেশিয়ার ব্যানডাং, জাকার্তা ও প্যাংকাল পিনাং বিমানবন্দর।
আরও পড়ুন: ‘আমায় ক্ষমা করে দিন’, হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী, ঘোষণা ক্ষতিপূরণের