শ্রীনগর: দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে কাশ্মীর (Kashmir) থেকে ৩৭০ ধারা (Article 370) তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছিল কাশ্মীর। সরকার জানিয়েছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেই কাশ্মীরে নির্বাচন হবে। কয়েকদিন আগেই উপত্যকার আসন পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। এমনকী কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi)। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা ৩১ অগস্টের মধ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ সম্পূর্ণ করা নির্দেশ দিয়েছে এবং খসড়া ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৯ সালে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের তকমা পাওয়ার পর এই প্রথম কাশ্মীরের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
মে মাসে পুনর্বিন্যাস কমিশন নির্বাচন কমিশনের কাছে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করেছিল এবং কমিশন সেই রিপোর্ট গ্রহণ করেছে। ৩৭০ এবং ৩৫-এ ধারা প্রত্যাহারের পর রাজ্যটিকে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখে বিভক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। পুনর্বিন্যাস কমিশনকে বিধানসভা কেন্দ্রগুলিকে নতুনভাবে একত্রিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে কাশ্মীরে তারা নির্বাচন করবে এবং রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিটিকও পুনর্বিবেচনা করবে। কমিশন জম্মু ডিভিশনে আরও ৬ টি এবং কাশ্মীর ডিভিশনে ১ টি বিধানসভা আসন অন্তর্ভুক্তির কথা বলেছে, তাতে আসন সংখ্যা বেড়ে ৯০ হবে। নির্বাচন কমিশনের পুনর্বিন্যাস প্যানেলে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন। এছাড়াও মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনার কে কে শর্মা এই প্যানেলে সদস্য হিসেবে ছিলেন। ২০২০ সালের ৬ মার্চ এক বছরের জন্য এই কমিশন তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই কমিশনের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছিল।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এবং নির্বাচন কমিশনার অনুপ চন্দ্র পাণ্ডে সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে পুনর্নির্মিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলির মানচিত্র তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের তরফে এই তোড়জোড় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে করা হচ্ছে, খুব দ্রুতই হয়তো কাশ্মীরের নির্বাচনের পথে হাঁটতে পারে কেন্দ্র। কাশ্মীরে নির্বাচন হলে তা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি কাশ্মীরে একের পর এক ঘটনায় একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে কীভাবে নির্বাচন করা সম্ভব হয়, এটাই এখন দেখার।