নয়া দিল্লি: সোমবার (৪ মার্চ), তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্রকে নতুন করে সমন পাঠাল ইডি। ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট’ লঙ্ঘনের মামলায় প্রশ্ন করার জন্য, তাঁকে আগামী ১১ মার্চ হাজিরা জিতে বলা হয়েছে ইডির দফতরে। এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত মাসেই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। কিন্তু, সেই সময় তদন্তে যোগ দেননি তৃণমূল নেত্রী। কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে কয়েক সপ্তাহের সময় চেয়েছিলেন তিনি। এই অবস্থায়, নতুন সমন পাঠিয়ে ১১ মার্চ তাঁকে দিল্লিতে অবস্থিত ইডির সদর দফতরে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। ফেমা বিধানের অধীনে তাঁর বিবৃতি রেকর্ড করা হবে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এক নন-রেসিডেন্ট এক্সটার্নাল অ্যাকাউন্ট, অর্থাৎ এক অনাবাসী ভারতীয়র বিদেশে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে তাঁর লেনদেন কেন্দ্রীয় সংস্থার স্ক্যানারে রয়েছে। সেই সঙ্গে আরও কয়েকটি বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ রেমিটেন্স এবং তহবিল স্থানান্তরের বিষয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।
গত বছরের শেষে, মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে ঘুষের বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল। লোকসভা এথিক্স কমিটি তদন্ত করে দেখেছিল, দর্শন হিরানন্দানিকে তিনি তাঁর সংসদীয় অ্যাকাউন্টের লগইন বিশদ দিয়েছিলেন মহুয়া। দুবাই এবং বিদেশের আরও কয়েকটি জায়গা থেকে সেই লগইন বিশদ ব্যবহার করে তাঁর সংসদীয় অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল। এর থেকে দেশের গোপনীয় তথ্যাদি বিদেশএ পাচার হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল এথিক্স কমিটি। এরপর, লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। লোকসভা থেকে বহিষ্কার করার পর, লোকপাল আইনে মহুয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, সোমবারই ইডির সামনে হাজিরা দিয়েছেন হিরানন্দানি গোষ্ঠীর সহ-প্রতিষ্ঠাতা, নিরঞ্জন হিরানন্দানি। তাঁর বিরুদ্ধেও ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট’-এর অধীনে মামলা দায়ের করেছে ইডি। ‘ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্টে’র ক্ষেত্রে আরবিআই-এর নির্দেশিকা তারা মানেনি বলে অভিযোগ রয়েছে হিরানন্দানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, বিদেশ থেকে পাওয়া লগ্নির তিনি অপব্যবহার করেছেন। হিরানন্দানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন ব্যবসায় এই বিদেশি লগ্নিকে কাজে লাগানো হয়েছে। এদিন, ইডি দফতরে উপস্থিত হয়ে, নিরঞ্জন হিরানন্দানি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার কাছে তাঁর বক্তব্য নথিভুক্ত করেছেন এবং কিছু নথি জমা দিয়েছেন। গত মাসেই মুম্বই এবং তার আশেপাশে হিরানন্দানি গোষ্ঠীর প্রায় চারটি কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। হিরানন্দানি গোষ্ঠী বলেছে, তারা এই তদন্তে ইডিকে সহযোগিতা করবে। তবে, হিরানন্দানিদের বিরুদ্ধে চলা এই তদন্ত, মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে চলা ফেমা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত নয় বলে জানিয়েছে এক সরকারি সূত্র।