করোনা চিকিৎসা সংক্রান্ত সামগ্রীতে ছাড় নিয়ে বৈঠক জিএসটি কাউন্সিলের, দাম কমতে পারে কী কী পণ্যের?
করোনার ভ্যাকসিনে জিএসটি অপসারণের কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে মেডিকেল অক্সিজেন, অক্সিজেন কনসেন্টেটর এবং পালস অক্সিমিটারের আইটেমগুলিতে জিএসটির হার কমানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
জ্যোতির্ময় রায় : শুক্রবার, ২৮ মে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ৪৩তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক (43rd GST Council meeting)। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন(Nirmala Sitharaman)-র নেতৃত্বে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এই কাউন্সিলটি বিগত আট মাসে এই প্রথমবার বৈঠক করতে চলেছে। এই বৈঠকে করোনার ওষুধ, ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত নানা সামগ্রীর উপর কর হ্রাস এবং রাজ্যগুলির প্রাপ্ত অর্থের ক্ষতিপূরণ হ্রাসের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূত্র অনুযায়ী, শীর্ষ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থার বৈঠকের আগে অ-বিজেপি এবং সমমনস্ক রাজনৈতিক দল শাসিত ৮ টি রাজ্যের অর্থাৎ রাজস্থান, পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, কেরল এবং পশ্চিমবঙ্গের অর্থ মন্ত্রীরা কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত অপরিহার্য বিভিন্ন বস্তুর উপর শূন্য শুল্ক হারের দাবিতে একটি মিশ্র রণকৌশল তৈরি করেছে।
এর আগে ২০১৮ সালে বিভিন্ন মহিলা সংগঠনের দাবিতে স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপর জিএসটি-তে ১২ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এই সপ্তাহের শুরুতে পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত সিং বাদল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে একটি চিঠিতে জানান, কোভিড মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পিপিই কিট, ডিজিটাল থার্মোমিটার, পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত স্যানিটাইজার বা জীবাণুনাশক এবং বিছানার চাদর সহ প্রায় ২০ শতাংশ বেসিক শুল্ক করে এবং ১৮ শতাংশ অবধি শুল্ক এবং পণ্য ও সেবা কর (জিএসটি) লাগানো হচ্ছে। এই জাতীয় পণ্যগুলিতে ১০ শতাংশ সারচার্জ নেওয়া হয়। বাদল চিঠিতে লিখেছেন যে, বর্তমান সংকট কালেও প্রয়োজনীয় বস্তুর উপরেও উচ্চ হারে কর আদায় করছে কেন্দ্র।
এই মাসের শুরুর দিকে অর্থমন্ত্রী সীতারামন কোভিড ভ্যাকসিন, ওষুধ এবং অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটের মত বস্তুকে জিএসটি থেকে ছাড় দিতে প্রায় অস্বীকার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, ” এই ধরনের ছাড় দিলে গ্রাহকদের জন্য জীবন রক্ষাকারী পণ্যকে ব্যয়বহুল করে তুলবে কারণ নির্মাতারা প্রদেয় শুল্ক দিতে পারবেন না।”
সূত্রের খবর, এই বৈঠকে করোনার ভ্যাকসিনে জিএসটি অপসারণের কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে মেডিক্যাল অক্সিজেন, অক্সিজেন কনসেন্টেটর এবং পালস অক্সিমিটারের আইটেমগুলিতে জিএসটির হার কমানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের মতে, কাউন্সিলের অ্যাজেন্ডায় কেবল কোভিড সম্পর্কিত পণ্যের উপরই জিএসটি হারকে হ্রাস করার সুপারিশ করা হয়েছে, কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভ্যাকসিনকেই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
কোভিডের ভ্যাকসিনে বর্তমানে জিএসটি হার পাঁচ শতাংশ। এছাড়াও পিপিই কিট, এন -৯৫ মাস্ক, আরটি-পিসিআর মেশিনের উপর জিএসটির হার হ্রাস সম্ভব নয় বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ বর্তমানে এইগুলি ৫ শতাংশের স্ল্যাবে রয়েছে, যার ফলে কোনও ঘাটতি থাকার সুযোগ নেই। এছাড়াও কাউন্সিলের অ্যাজেন্ডায় ভ্যাকসিন সহ করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু পণ্যও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মেডিক্যাল গ্রেড অক্সিজেন, অক্সিজেন কনসেন্টেটর, অক্সিজেন জেনারেটর, করোনা পরীক্ষার কিট এই চারটি পণ্যে ১২ শতাংশ জিএসটি হ্রাস করে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন, অক্সিজেন কনসেন্টেটর, অক্সিজেন জেনারেটরে জিএসটি হ্রাস হার কেবল ৩১ জুলাই অবধিই প্রযোজ্য হবে এবং একই সময়ে, কোভিড টেস্টিং কিটে শুল্ক হ্রাসের হার ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ভয়াবহ আগুনে ভস্মীভূত উধমপুরের কারখানা, বায়ুসেনার ৩ ঘণ্টায় প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আগুন