দিল্লি : ২৫ বছর আগের দুর্ঘটনার স্মৃতি ফিরল দিল্লির উপহার সিনেমা হলে। ১৯৯৭ সালে এই সিনেমা হলেই আগুন লেগে ৫৯ জন মারা গিয়েছিলেন। তারপর থেকে বন্ধ ছিল হল। আজ ভোরে ওই হলে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের ৯টি ইঞ্জিন। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। বন্ধ সিনেমা হলে কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও জানা যায়নি।
দিল্লি দমকল বিভাগের ডিরেক্টর অতুল গর্গ বলেন, হলের ভিতর সিট ও ফার্নিচারে আগুন লেগেছিল। ভোর ৪টে ৪৬ মিনিটে দমকল আগুন লাগার খবর পায়। ৭টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগুনে হলের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কেউ হতাহত হননি।
আজ সকালে উপহার সিনেমা হলে এই আগুন ১৯৯৭ সালের স্মৃতি উসকে দিয়েছে। কী ঘটেছিল ১৯৯৭ সালে?
দিল্লির গ্রিন পার্ক এলাকায় ওই সিনেমা হল সেইসময় রমরম করে চলত। ১৯৯৭ সালের ১৩ জুন। তিনটের শো-তে ‘বর্ডার’ সিনেমা দেখতে ভিড় করেছেন দর্শকরা। আচমকা চারদিক ধোঁয়ায় ভরে যায়। হল থেকে বেরোনোর জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। হলের মধ্যেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ৫৯ জনের। শ্বাসকষ্ট এবং হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে গুরুতর অসুস্থ হন ১০৩ জন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে জানা যায়, আগুন বিকেলে লাগলেও তার সূত্রপাত হয়েছিল সকালে। ওই সিনেমা হলের নিচের তলায় দুটি ট্রান্সফর্মার ছিল দিল্লি বিদ্যুৎ বোর্ডের। তার একটিতে আগুন লেগেছিল সকাল সাতটা নাগাদ। বিস্ফোরণের শব্দ ও ধোঁয়া দেখতে পান সুধীর কুমার নামে এক গার্ড। সঙ্গে সঙ্গে দমকল ও দিল্লি বিদ্যুৎ বোর্ডে খবর দেওয়া হয়। ৭টা ২৫ মিনিটে ওই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দেখা যায়, ট্রান্সফর্মারের কেবল কিছুটা পুড়ে গিয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা সারানো হয়। এবং ট্রান্সফর্মার চালু করা হয়। কিন্তু, ট্রান্সফর্মার ঠিকমতো সারানো হয়নি। কেবল সংযোগ ঠিকমতো না হওয়ায় তাপ উৎপন্ন হয় । এবং রেডিয়েটরে একটা ছেদ হয়। এই ছেদ দিয়ে ট্রান্সফর্মারের তেল বাইরে আসে। এবং তাপে আগুন লাগে।
ট্রান্সফর্মারের দরজার কয়েক হাত দূরে ছিল গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা। সেখানে তেল গড়িয়ে পৌঁছায়। আগুন লাগে গাড়িগুলিতে। ধোঁয়ায় ভরে যায় সিনেমা হল। ভিতরে ধোঁয়া ঢুকে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকে। অভিযোগ, দর্শকদের বাইরে বের হতে সাহায্য করার জন্য হলের কোনও কর্মী ছিলেন না। অ্যালার্ম বেলও বাজেনি। সবমিলিয়ে ভেতরে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। সিনেমা দেখতে এসে প্রাণ হারান ৫৯ জন।