কাশ্মীর: ফের হড়পা বান উপত্যকায়। রবিবার সকালেই জম্মু-কাশ্মীরের বারামুল্লায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে একই পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও একজন। তাঁর খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালেই আচমকা মেঘ ভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই পার্বত্য এলাকায় হড়পা বান আসে। জলের তোড়ে ভেসে যায় রাজৌরির কালসিয়ান নৌসেরা অঞ্চলের একটি বাড়ি। ওই পরিবারের ছয় সদস্যই জলের তোড়ে ভেসে যান। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনে খবর দিতেই উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও অবধি চারজনের দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, এদের মধ্যে দু’জন শিশুও রয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের নাম মহম্মদ তারিক খারি (৮), শাহবনাজা বেগম (৩০), নাজিয়া আখতার (১৪), আরিফ হুসেন খারি (৫)। এরা সকলেই একই পরিবারের সদস্য। নিখোঁজ মহম্মদ বাসির খারি (৮০)র খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিকরা।
উত্তর কাশ্মীরের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল সুজিত কুমার বলেন, “সকালের মেঘভাঙা বৃষ্টিতে একই পরিবারের ছয়জন ভেসে যান। এদের মধ্যে চারজনের মৃতদেহ ও একজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আরও এক সদস্যের খোঁজ মিলছে না এখনও। এনারা সকলেই রাজৌরি জেলার বাসিন্দা। হাজি বসির আহমেদ খারি এই পরিবারের প্রধান, তাঁরই খোঁজ মিলছে না। উদ্ধারকারী দলের সন্দেহ, হড়পা বানের জেরে পাহাড় থেকে যে মাটি ধুয়ে চলে এসেছে, তার নীচেই চাপা পড়ে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পরই যে হড়পা বান নেমেছিল, তাতে চাষের জমি ও বেশ কিছু সরকারি কার্যালয় জলে ডুবে গিয়েছে। রফিয়াবাদ এলাকার ওয়াটারগাম এলাকার একটি স্কুলও জলে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ওই অঞ্চলটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় উদ্ধারকার্যে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে বলেই জানিয়েছে এসডিআরএফ। মোবাইলের টাওয়ার না থাকায় যোগাযোগ করতেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা। প্রবল বৃষ্টি আর মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদেরও এ দিন সতর্ক করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে যাতে তাঁরা যেন নদীর আশেপাশে না যান।
এর আগে গত ২৮ জুলাইও মেঘভাঙা বৃষ্টি ও তার জেরে হড়পা বান নামে উপত্যকায়। জম্মু-কাশ্মীরের কিশ্তোর জেলার দাচান তহশিলের হোনজার গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টি নামে। বিপর্যয়ে মৃত্যু হয় ৭ জনের, নিখোঁজ হয়ে যান প্রায় ২০ জন। উদ্ধারকার্যের জন্য বায়ুসেনার জওয়ানদেরও পাঠানো হয়। সেই দিনই অমরনাথের গুহার একেবারে কাছেও মেঘ ভাঙা বৃষ্টি নামে। তবে সেই সময় কোনও পুণ্যার্থী না থাকায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: ‘কেবল ভর্তুকির উপরই নির্ভরশীল বানিয়েছে কংগ্রেস’, বিজেপিতে যোগ দিয়েই বিস্ফোরক রাজকুমার