নয়া দিল্লি: এক চিলতে জায়গা, তা নিয়েই দুই দেশের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে বিরোধ, শত্রুতা। নতুন করে যুদ্ধ বেধেছে ইজরায়েল (Israel) ও প্যালেস্তাইনের (Palestine) জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের (Hamas) মধ্যে। আর এই যুদ্ধে বলি হচ্ছেন গাজা স্ট্রিপের (Gaza Strip) নিরাপরাধ মানুষেরা। একদিকে যেমন হামাস গাজা স্ট্রিপ থেকে হামলা চালাচ্ছে, তেমনই বদলা নিতে গাজা স্ট্রিপে গোলাবর্ষণ করছে ইজরায়েল সেনা। দুই দেশের টানাপোড়েনে আখেৎে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাজাই। আর গাজায় এই সঙ্কটই উদ্বেগ তৈরি করেছে জম্মু-কাশ্মীর (Jammu Kashmir) নিয়েও। কেন্দ্রের চিন্তা, গাজায় যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তা জম্মু-কাশ্মীরেও হতে পারে। ফের একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে উপত্যকা। সম্প্রতিই বেশ কিছু জঙ্গি গতিবিধি সেই চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপর কেন্দ্রও। তড়িঘড়ি উপত্য়কার নিরাপত্তা নিয়ে করা হল বৈঠক।
বুধবারই জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে ১৫ কর্পসের সদর দফতরে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামিদিনে যদি বিক্ষোভ শুরু হয় উপত্যকায়, তবে কীভাবে তা প্রতিরোধ সম্ভব, তা নিয়েও আলোচনা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের উপদেষ্টা আর আর ভাটনগর, সেনাবাহিনীর নর্থান কম্যান্ডের কম্যান্ডার উপেন্দ্র দ্বিবেদী, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল সহ একাধিক শীর্ষকর্তা।
নিরাপত্তা বাহিনীর এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অবস্থানগতভাবে কাশ্মীর ও গাজা অনেকটাই এক হওয়ায়, গাজার পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন উপত্যকাবাসী। নিরাপত্তা বাহিনীর আশঙ্কা, জম্মু-কাশ্মীরে ফের একবার বিক্ষোভ-অশান্তি শুরু হতে পারে। বিঘ্নিত হতে পারে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। সেই কারণেই পরিস্থিতি মোকাবিলার ছক কষতে আগেভাগেই বৈঠক করা হল।
একইসঙ্গে বিদেশি জঙ্গিদের গতিবিধি ও হিংসায় উসকানিতে তাদের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে স্থানীয় জঙ্গির সংখ্যা একধাক্কায় অনেকটা কমলেও, উল্টোদিকে বিদেশি, বিশেষ করে পাকিস্তানি জঙ্গির গতিবিধি ও সন্ত্রাসে যোগ অনেকটাই বেড়েছে। চলতি বছরে উপত্যকায় ৪৬ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে, এর মধ্যে ৩৭ জনই পাকিস্তানি। বিগত ৩৩ বছরে এই প্রথম স্থানীয় জঙ্গির তুলনায় চারগুণ বেশি বিদেশি জঙ্গিকে খতম করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অবলুপ্তি ও জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর উপত্যকার পথেঘাটে বিক্ষোভ-অশান্তি অনেকটাই কমে গিয়েছে।