Ghaziabad: ‘পুলিশ ডাকুন…’, বউকে খুনের চারদিন পর পথচারীদের ধরে ধরে বিলাপ প্রৌঢ়ের
Ghaziabad murder: বাড়ির সামনে বসে বিলাপ করছেন প্রৌঢ়। রাস্তা দিয়ে যেই যাচ্ছেন, তাঁকেই ডেকে ডেকে তিনি বলছেন, "বউকে খুন করেছি। পুলিশে খবর দিন।" পুলিশ আসতেই ঘর থেকে বের হল স্ত্রীয়ের মৃতদেহ। পুলিশের দাবি, অন্তত ৪ দিন আগে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনা উত্তকর প্রদেশের গাজিয়াবাদে।
নয়া দিল্লি: বাড়ির সামনে মাটিতে বসে আছেন এক প্রৌঢ় ব্যক্তি। রাস্তা দিয়ে যেই যাচ্ছেন, তাঁকেই ডেকে ডেকে ওই প্রৌঢ় বলছেন, “আমার বউকে আমি খুন করেছি। আমাকে পুলিশে ধরিয়ে দিন।” শনিবার, এই অদ্ভুত পরিস্থিতির সাক্ষী হয় নয়া দিল্লির উপকণ্ঠে অবস্থিত গাজিয়াবাদের এক আবাসনের বাসিন্দারা। পুলিশে খবর দিয়েছিলেন তাঁরা। এসে তাঁদের এক কামড়ার ফ্ল্যাট থেকে তাঁর স্ত্রীর দেহ উদ্ধার করে। পুলিশের দাবি, চার দিন আগেই এক পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার মধ্যে, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিলেন ৫৫ বছরের ভরত সিং। পরের চারদিন বাড়িতেই স্ত্রী লাশ লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। অসহ্য দুর্গন্ধ বের হওয়া শুরু হতেই, তিনি হত্যার বিষয়ে প্রতিবেশীদের জানান এবং তাঁদের পুলিশে খবর দিতে বলেছিলেন। তারপরই বাড়ির বাইরে বসে স্ত্রীকে হত্যা করা নিয়ে বিলাপ করা শুরু করেছিলেন।
গাজিয়াবাদের আবাসনের ওই এক কামড়ার ফ্ল্যাটটিতে তাঁরা ভাড়ায় থাকতেন ভরত সিং এবং তাঁর স্ত্রী ৫১ বছরের সুনিতা। তাঁদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ভরত সিং না জানানো পর্যন্ত, তাঁদের পাশের বাড়িতে এত বড় অপরাধ ঘটে গিয়েছে বলে, বুঝতেই পারেননি। কিন্তু, গত চারদিন ধরে সুনিতার দেহ বিছানাতেই রেখে দিয়েছিলেন ভরত। এমনকি, শুক্রবার কাজেও গিয়েছিলেন এই সেলসম্যান। শনিবার, প্রতিবেশীদের কাছে অপরাধ স্বীকার করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চান তিনি। বিকাল ৩টে নাগাদ খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। ঘরে ঢুকে তারা সুনিতার দেহ উদ্ধার করে। দেহটিতে পচন শুরু হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। খবর দেওয়া হয় সুনিতার পরিবারকে। তাঁদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে, মাসুরি থানায় ভরতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় হত্যার মামলা করা হয়েছে।
এক পুলিশ কর্তা বলেছেন, “আমাদের প্রতিবেশীরা জানিয়েছিল, ভরত তাঁর স্ত্রী সুনিতাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। সেখানে পৌঁছে আমরা তাঁদের বাড়িতে মহিলার লাশ পাই। হত্যাকাণ্ডটি অন্তত তিন দিন আগে ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছি। আমাদের জেরার মুখে তিনি বলেছেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার সময় তিনি তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করেছেন। আমরা মহিলার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছি এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। এই বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে।”
তদন্তে জানা গিয়েছে, সুনিতাকে বিয়ে করার আগেও একবার বিয়ে হয়েছিল ভরতের। আড়াই বছর আগে সুনিতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেছিলেন ভরত। তবে, তার আগে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা একসঙ্গে থাকতেন। প্রাক্তন স্ত্রীকে নিয়মিত আর্থিক সহায়তা দিতেন ভরত। এই নিয়ে ভরত ও সুনিতার সম্পর্কের মধ্যে জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঘন ঘন মতবিরোধ হয়। যা থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘটে গিয়েছে এই মারাত্মক ঘটনা।