হরিয়ানা: কারনালে কৃষকদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের লাঠিতে আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক কৃষক। আর তারই প্রতিবাদে আজ শনিবার সকাল থেকে রাস্তায় বসে অবরোধ করল হরিয়ানার কৃষকেরা। এরই মধ্যে শনিবার দ্বিতীয়বারের জন্য লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে। এ দিন জালিয়ানওয়ালাবাগ মেমোরিয়াল সংস্কারের পর ভার্চুয়ালি তা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তার আগেই প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন অমৃতসরের কৃষকেরা। তাঁদের ওপর দ্বিতীয়বারের জন্য লাঠি চার্জ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই লাঠি চার্জের প্রতিবাদে রাস্তায় রাস্তায় বসে পড়ে অবরোধ করে কৃষকেরা। দিল্লি-অমৃতসর, পাঁচকুল্লা-সিমলা, ফতেহাবাদ-ছত্তীসগঢ়, গোহানা-পানিপত, জিন্দ-পাতিয়ালা, অম্বালা-চণ্ডীগড়, হিসার- চণ্ডীগড়ের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ করে দেন কৃষকেরা। কেউ খাটিয়া পেতে রাস্তার মাঝে বসে যান, কেউ আবার সামনে দাঁড়িয়ে আটকে দেন বাস, ট্রাক। এই অবস্থান বিক্ষোভের জেরে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। আটে যায় বহু গাড়ি। জানা গিয়েছে, বিজেপি নেতা ওপি ধনখড়ের কমভয় আটকে ছিলেন বেশ কয়েকজন কৃষক। এরপরই লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটে।
হরিয়ানার ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের প্রধান গুরনাম সিং চাদুনি জানিয়েছেন, কৃষকদের ওপর নৃশসভাবে লাঠিচার্জ করা হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু কৃষক। তাদের জামা ভিজে গিয়েছে রক্তে। যদিও পুলিশের দাবি, সামান্য কয়েকজন পুলিশকর্মী গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। অবস্থানের জেরে যান চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল, তাই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।
এই ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করেছেন রাহুল গান্ধী। হরিয়ানার বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, ‘আবারও কৃষকদের রক্তপাতের ঘটনা ঘটল। আরও একবার লজ্জায় মাথানত করল দেশ।’ হরিয়ানার কংগ্রেস প্রধান কুমারি শেলজা বলেন, ‘কৃষকদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের। কড় ভাষায় এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছে কংগ্রেস।
কৃষক আন্দোলন চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। হরিয়ানা সহ একাধিক রাজ্যে চলছে এই আন্দোলন। কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এই ইস্যু নিয়ে দেখা করেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি দুটি চিঠি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। একটি চিঠিতে পঞ্জাব সহ অন্যান্য রাজ্যজুড়ে কৃষকদের যে আন্দোলন চলছে, তার কারণ হল বিতর্কিত কৃষি আইন। কেন্দ্র যেন এই বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করে। অপর চিঠিতে তিনি অনুরোধ জানান, বিনামূল্যে আইনি সাহায্য পাওয়ার তালিকায় যেন কৃষকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে চলা কৃষক আন্দোলনে ইতি টানতে কেন্দ্রের তরফে একাধিকবার কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসা হয়েছিল। এক থেকে দেড় বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাবও দেওয়া হয়, কিন্তু কৃষকরা আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় থাকে। তবে সম্প্রতিই কৃষকদের তরফে ফের একবার আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আরও পড়ুন: উৎসবের মুখে করোনা নিয়ে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করল কেন্দ্র, গাইডলাইনের মেয়াদ বাড়ল আরও এক মাস