উৎসবের মুখে করোনা নিয়ে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করল কেন্দ্র, গাইডলাইনের মেয়াদ বাড়ল আরও এক মাস
পুজোর মুখেই তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এই পরিস্থিতিতে নয়া নির্দেশিকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
নয়া দিল্লি: উৎসবের মরশুমে সচেতন থাকতে হবে, রাজ্যগুলিকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (Home Ministry)। পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের একাধিক জায়গায় শুরু হচ্ছে উৎসবের মরশুম। উৎসবে সামিল হতে গিয়ে যাতে নতুন করে করোনা (Covid 19) সংক্রমণ বৃদ্ধি না পায়, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবারই কেন্দ্রের তরফে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে দেশের সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পযফন্ত করোনা সংক্রান্ত গাইডলাইনের মেয়াদও বাড়ানো হয়েছে।
মুখ্য সচিবদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা। তিনি চিঠিতে জানিয়েছেন, সার্বিকভাবে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তবে কিছু এলাকায় স্থানীয়ভাবে এখনও করোনা ছড়াচ্ছে। সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, যে সব এলাকাগুলিতে মানুষ করোনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে সেখানে যেন সংক্রমণ ঠেকাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
বড়সড় জমায়ের যাতে না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক করার কথা বলা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পাঁচটি পর্যায়ের সতর্কতা নিতে বলেছে কেন্দ্র। টেস্ট-ট্র্যাক-ট্রিট অর্থাৎ কোভিড পরক্ষা করে আক্রান্তদের চিহ্নিত কতে চিকিৎসা করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ভ্যাকসিনের ওপর জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। আর অবশ্যই করোন পরিস্থিতিতে সঠিক বিধি মেনে চলার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
সম্প্রতি, সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের তরফ থেকে এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অক্টোবরেই চরম আকার ধারণ করতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ। শিশুদের ক্ষেত্রে যে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকবে, সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। অর্থাৎ উৎসবের মরসুম যে এবারও দেশবাসীর জন্য খুব একটা স্বস্তির নয়, এই রিপোর্টে মিলেছে তেমনই ইঙ্গিত।
কলকাতাতেও শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতি। তৃতীয় ঢেউয়ের আগে প্রস্তুতির নিরিখে মূলত দু’টি বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছে স্বাস্থ্যভবন। টিকাকরণে গতি, কোভিড আক্রান্ত কম বয়সীদের চিকিৎসায় পরিকাঠামোয় জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শহরের পরে পঞ্চায়েত এলাকাতেও টিকাকরণের হার বৃদ্ধিতে নজর দিচ্ছে রাজ্য। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে পেডিয়াট্রিক এইচডিইউ-এর পরিকাঠামোও তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। মৃদু-মাঝারি উপসর্গ যুক্ত কমবয়সিদের (৩ মাস-১২ বছর) জন্য রাজ্যজুড়ে ১০ হাজার শয্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। গত এক-দেড় মাসে কোনও জেলার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যাই ১০০ পেরোয়নি। কিন্তু আতঙ্ক বাড়িয়ে গত বৃহস্পতিবার ফের একবার কলকাতার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সেঞ্চুরি পার করেছে।
ইতিধ্যেই তৃতীয় ঢে্উ নিয়ে বিশেষ প্রস্তুতি শুরু করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানিয়েছেন, ‘থার্ড ওয়েভের মোকাবিলা করার জন্য সম্পূর্ণভাবে তৈরি নরেন্দ্র মোদী সরকার। ২৩,১২৩ কোটি থাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এই ক্ষেত্রে। পেডিয়াট্রিক কেয়ারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, কারণ তৃতীয় ঢেউতে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। আরও পড়ুন: কয়লাকাণ্ড বিজেপির ‘নেংটি ইঁদুর’, এজেন্সি লেলিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র, তীব্র প্রতিক্রিয়া মমতার