নয়া দিল্লি: ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসের মাধ্যমে ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। আর সেই অভিযোগের স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়ে একাধিক মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আজ বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে ছিল সেই মামলার শুনানি। এ দিন সুপ্রিম কোর্ট জানায় যে যদি এই রিপোর্ট সত্যি হয় তাহলে অভিযোগ সত্যিই গুরুতর। আবেদনকারীদের আবেদনের কপি কেন্দ্রীয় সরকারকে দেওয়ার কথা জানিয়েছে আদালত। আগামী মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।
‘রিপোর্ট সত্য হলে অভিযোগ গুরুতর’
এ দিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামাণ বলেন, ‘রিপোর্ট সত্যি হলে অভিযোগটি গুরুতর, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকছে না। সত্যিটা বের করে আনতে হবে। তবে ঠিক কাদের নাম ওই তালিকায় রয়েছে তা জানার নেই।’ এ দিন সুপ্রিমকোর্টে মোট ৯টি পৃথক মামলার শুনানি হয়। আবেদনকারীদের মধ্যে ছিলেন সাংবাদিক এন রাম ও শশী কুমার। আবেদন করেছিল এডিটর’স গিল্ড অফ ইন্ডিয়াও। প্রধান বিচারপতি এনভি রামণ ও বিচারপতি সূর্যকান্তের বেঞ্চের এ দিন এই মামলার শুনানি হয়।
দু’বছর পর কেন মামলা?
এ দিন বিচারপতি দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন। এক, কেন আবেদনকারীরা কোনও এফআইআর করেননি? দুই, ২০১৯-এ যে পেগাসাস নিয়ে অভিযোগ সামনে এসেছে তা নিয়ে দু’বছর পর কেন মামলা হল? শুধুমাত্র সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে মামলা হয়েছে। তাই বিচারপতির দাবি, আবেদনকারীদের আরও বেশি তথ্য দিতে হবে।
কেন এফআইআর করা হয়নি সেই প্রশ্নের উত্তরে আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ‘যেহেতু পেগাসাস কোনও দেশের সরকারকেই শুধুমাত্র বিক্রি করা হয়, তাই পৃথক কোনও ব্যক্তির কাছে এই সংক্রান্ত তথ্য নেই। আর দু’বছর পর কেন মামলা হল, সেই প্রসঙ্গে সিব্বল জানান সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই এই মামলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি তখন জিজ্ঞেস করেন ২০১৯-এ এই রিপোর্ট এসেছিল। সিব্বলের জবাব, তখনও এই স্পাইওয়্যারের বিস্তৃতি সম্পর্কে জানা ছিল না।
ছবি কিংবা ভিডিয়ো তুলতে পারে পেগাসাস। কারা অপারেট করছে?
শুনানি চলাকালীন সাংবাদিক এন রাম ও শশী কুমারের আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ‘ছবি কিংবা ভিডিয়ো তুলতে পারে পেগাসাস স্পাইওয়্যার। অর্থাৎ আমার কোনও ব্যক্তিগত মুহূর্তে আমার ফোনের ক্যামেরা ও স্পিকার অ্যাকটিভ হয়ে যেতে পারে।’ তিনি আরও জানান, কাউকে কিছু না জানিয়েই পেগাসাস আমাদের জীবনে থাবা বসাতে পারে। প্রত্যেকটা মুহূর্ত নজর রাখতে পারে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘কারা এই স্পাইওয়্যার কিনেছে? কত টাকা খরচ হয়েছে? কোন হার্ডওয়ারে জমা হয়েছে তথ্য?’
হাজির থাকতে হবে সরকার পক্ষের কাউকে
পরবর্তী শুনানির দিন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কাউকে হাজির হতে হবে। ঘণ্টাখানেকের শুনানিতে এমনটাই জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বেশ কয়েকজন আবেদনকারী ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে নোটিস দিলেও এ দিনের শুনানিতে সরকারের তরফে কেউ হাজির ছিলেন না। আরও পড়ুন: ‘দিয়ে দেব! কথাটির কোনও যুক্তি নেই, কেন এখনও টাকা দেননি?’ অসন্তুষ্ট হয়ে রাজ্যকে প্রশ্ন বিচারপতির