রাঁচি: সরাসরি গ্রেফতার করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর), কয়লা খনি সংক্রান্ত তহবিল তছরুপের মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই প্রেক্ষিতে হেমন্ত সোরেন জানিয়েছেন, যদি তিনি কোনও অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাঁকে প্রশ্ন না করে সরাসরি গ্রেফতার করা হোক। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান বলেন, “আজ ছত্তীসগঢ়ে আমার একটা কর্মসূচি আছে। তা জেনেও ইডি আজ আমায় তলব করেছে। আমি যদি এত বড় অপরাধ করে থাকি, তাহলে আমাকে গ্রেফতার করুন। প্রশ্ন করছেন কেন? ইডি অফিসের আশপাশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আপনারা ঝাড়খণ্ডীদের ভয় পান কেন?”
এদিন ইডির কার্যালয়ে হাজিরা দেওয়ার বদলে রাঁচিতে সমর্থকদের নিয়ে একটি সভা করেন হেমন্ত সোরেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, একজন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মুখ্যমন্ত্রীকে অপদস্থ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার জন্যই তাঁকে তহবিল তছরুপের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। জেএমএম প্রধান বলেন, “আমরা রাজ্যে কিছু বহিরাগত গ্যাংকে চিহ্নিত করেছি, যারা আদিবাসী জনগণকে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে দিতে চায় না। এই রাজ্যে ঝাড়খণ্ডীদেরই শাসন চলবে, বহিরাগতদের নয়। আসন্ন লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ধুয়ে মুছে যাবে।” ইডির এই সমন পাঠানো, “যারা যারা বিজেপির শাসনের বিরোধিতা করছে, তাদের কন্ঠরোধের জন্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার” বলে দাবি করেন তিনি। এই ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
এই কয়লা খনি তহবিল তছরুপের মামলায় ইতিমধ্যেই পঙ্কজ মিশ্র নামে হেমন্ত সোরেন ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ী এবং আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গত জুলাই মাসে পঙ্কজ মিশ্রর বাড়ি ও ব্যাঙ্কে হানা দিয়েছিল ইডি। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১১.৮৮ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পাশাপাশি, তার বাড়ি থেকেও ৫.৩৪ কোটি টাকার বেহিসেবি নগদ অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তার কাছ থেকে হেমন্ত সোরেনের স্বাক্ষর করা দুটি চেকও উদ্ধার হয়েছে। ইডির অভিযোগ, হেমন্ত সোরেনের নির্বাচনী কেন্দ্র বারহাইতে, পঙ্কজ মিশ্র অবৈধ খনি ব্যবসা চালাত।
পঙ্কজ মিশ্রের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই, হেমন্ত সোরেনকে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। এর আগে এই মামলায় ইডি তাঁর প্রেস উপদেষ্টাকেও জেরা করেছিল। ইডির এই মামলার পাশাপাশি ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর যোগ্যতার প্রশ্নে মামলা চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী পদের অপব্যবহার করে নিজেকেই কয়লা খনির লিজ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।