নয়া দিল্লি: উত্তপ্ত বাংলাদেশ। সীমান্তের ওপারে ক্রমাগত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন হিন্দু ও সংখ্যালঘুরা, এমনটাই অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে চিন্তা বাড়ছে সীমান্তে অনুপ্রবেশ নিয়ে। বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষই ভারতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। বিএসএফের চোখে ধুলো দিয়ে কখনও কাঁটাতাঁরের বেড়া টপকিয়ে, কখনও আবার অসুরক্ষিত সীমান্ত দিয়েই অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে। এবার ফাঁস হয়ে গেল বড় অনুপ্রবেশ চক্র। পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশের নেটওয়ার্কের গোপন তথ্য এল সামনে। জানা গেল, মাত্র ১২ হাজার টাকা দিয়েই অনুপ্রবেশ সম্ভব হচ্ছে ওপার বাংলা থেকে এপারে।
ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশি এক যুবক জানায়, কীভাবে সে ১২ হাজার টাকায় বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে। সইফুল ইসলাম নামক ওই যুবক বাংলাদেশের মহেশপুরের বাসিন্দা ছিল। বাংলাদেশে অশান্তি শুরু হতেই সে পড়শি দেশ থেকে এ দেশে পালিয়ে আসে।
ওই যুবক জানিয়েছে, পেট্রাপোলের কাছ থেকেই পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ করেছে সে। নদী পেরিয়ে ভারতে এসেছে। বিজিবি বা বিএসএফ- দুই দেশের কোনও সীমান্তরক্ষীর হাতেই ধরা পড়েনি সে। সীমান্তে অনেক এজেন্ট ঘোরাফেরা করে। তাদের মধ্যে একজনকে ১২ হাজার টাকা দিতেই ভারতে ঢোকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
বছর বিশের যুবক বলেন, “বাংলাদেশে চরম আর্থিক সঙ্কটে ছিলাম। আমার বাবা বলেছিল যে ড্রাগন ফ্রুট চাষ করে ঋণ মেটাতে। কিন্তু শুধু চাষ করে বা অন্য কাজ করে প্রতি মাসে ৬-৭ হাজার টাকা ঋণ মেটানো সম্ভব ছিল না। তাই ভারতে এসেছি কাজ করতে।”
যদি ভারতে ধরা পড়ে যায়, কার্যত নিরুত্তাপ হয়েই ওই যুবক বলেন, “যদি পুলিশ আমায় গ্রেফতার করে, তবে ৬ মাস থেকে ২ বছর জেল খাটতে হবে। তারপর আমায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। তাহলে হয়তো আমি আমার মাকে ফের দেখতে পাবো।”
এই বিষয়ে বিএসএফের ইন্সপেক্টর জেনারেল নীলোৎপল কুমার পাণ্ডে জানান, মহেশপুরের মতো এলাকায় আকছার অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলে। বিগত দুই মাসে ৭০০-৮০০ জনক আটক করা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ৪০০ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়াজাল নেই। এখান থেকেই অনুপ্রবেশ হচ্ছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার এই ইস্যুতে কাজ করছে।