লখনউ: রোজগার না থাকলেও, স্ত্রীকে খরচ দিতে বাধ্য় স্বামী। প্রয়োজনে পুরুষরা ঠিকা শ্রমিক হিসাবে কাজ করেও দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় করতে পারেন। বিবাহ বিচ্ছেদের পর খোরপোশের মামলায় এমনটাই পর্যবেক্ষণ রাখল এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
এক ব্যক্তির বিবাহ বিচ্ছেদের পর পারিবারিক আদালতের তরফে ওই ব্যক্তিকে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীকে মাসিক ২ হাজার টাকা খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই এলাহাবাদ হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেছিলেন। তবে আদালতের লখনউ বেঞ্চের তরফে সেই পিটিশন খারিজ করে দেওয়া হয়। বিচারপতি রেণু আগরওয়াল নির্দেশ দেন, খোরপোশের বকেয়া টাকা যাতে ওই ব্যক্তি তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীকে মিটিয়ে দেন, তা নিশ্চিত করতে।
জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে ওই ব্যক্তির বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য় ওই মহিলার উপরে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। ওই মহিলা বাধ্য হয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। ২০১৬ সাল থেকে তিনি আলাদা থাকছিলেন। পরে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সেই সময় পারিবারিক আদালতের তরফে তাঁকে প্রাক্তন স্ত্রীকে মাসিক ২০০০ টাকা খোরপোশ দিতে বলা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন ওই ব্যক্তি।
আবেদনে ওই ব্যক্তি জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী শিক্ষকতা করে মাসে ১০ হাজার টাকা উপার্জন করে। অন্যদিকে তিনি গুরুতর অসুস্থ, চিকিৎসার খরচ অনেক। তাঁর মা-বাবা ও বোনও তাঁর উপার্জনের উপরই নির্ভরশীল। রোজগারের জন্য তিনি দিনমজুরের কাজ করছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে প্রাক্তন স্ত্রীকে খোরপোশ দেওয়া সম্ভব নয়।
আদালতের নির্দেশে বলা হয়, “ওই ব্যক্তির প্রাক্তন স্ত্রী মাসে ১০ হাজার টাকা উপার্জন করেন, এমন কোনও প্রমাণ বা নথি দেখাতে পারেননি”। আদালতের তরফে জানানো হয়, ওই ব্যক্তি শারীরিকভাবে সুস্থ, কায়িক শ্রম করে উপার্জন করতে সক্ষম তিনি।
হাইকোর্টের তরফে নির্দেশে বলা হয়, “যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া হয় যে ওই ব্যক্তির চাকরি বা গাড়ি ভাড়া দিয়েও কোনও উপার্জন নেই, তাও তিনি স্ত্রীকে খোরপোশ দিতে বাধ্য। সুপ্রিম কোর্ট ২০২২ সালে অঞ্জু গর্গের মামলায় বলেছিল কোনও ব্যক্তি অদক্ষ শ্রমিক হিসাবে কাজ করলেও, তিনি দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা উপার্জন করতে পারেন।”