নয়া দিল্লি: মলনুপিরাভির (Molnupiravir) এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে মিউটাজেনিসিটি, পেশি এবং হাড়ের ক্ষতি সহ বেশ কিছু উদ্বেগের কারণ থেকে যাচ্ছে। সেই কারণে, এটিকে চিকিৎসার জন্য জাতীয় গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল চিকিৎসক বলরাম ভার্গব (ICMR DG Balaram Bhargav)।
আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল জানিয়েছেন, অ্যান্টিভাইরাল কোভিড -১৯ ওষুধটি করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টাস্ক ফোর্সের চিকিৎসা গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত নয়। ভার্গব আরও বলেন, এই ওষুধ কোনও মহিলাকে দেওয়া হলে, তাঁকে তিন মাস ধরে গর্ভনিরোধক পদ্ধতির মধ্যে থাকতে হবে। অন্যথায় শিশুর ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
বলরাম ভার্গবের কথায়, “মলনুপিরাভিরের ব্যবহারে মিউটাজেনিসিটি, পেশি এবং হাড়ের ক্ষতি সহ একাধিক ক্ষেত্রে উদ্বেগ রয়েছে। এই ওষুধ মহিলাদের দেওয়া হলে তিন মাস গর্ভনিরোধ করতে হবে, নাহলে শিশুদের সমস্যা হতে পারে।”
ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল (ডিসিজিআই) গত সপ্তাহে মলনুপিরাভিরকে আপদকালীন ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। মূলত, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ভারতে ঢুকে পড়ার পর, করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মলনুপিরভিরের ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য বলেছেন, ভারতে ১৩টি কোম্পানি এই অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ তৈরি করবে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গেও স্বাস্থ্য দফতর থেকে প্রকাশিত প্রোটোকলে কোভিডের চিকিৎসার জন্য প্রাথমিকভাবে মোলনুপিরাভিরের ব্যবহারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার কয়েকদিনের মধ্যেই ফের সিদ্ধান্ত বদল করে রাজ্য।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৯৭ জন, যা গতকালের আক্রান্তের সংখ্যার তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশী। গত ২৮ ডিসেম্বর দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯ হাজারের কাছাকাছি। মাত্র ৯ দিনেই সেই সংখ্যাটি প্রায় ৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৫৩৪ জনের। মৃতের সংখ্যায় এই আচমকা বৃদ্ধির কারণ হল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী, কেরলের করোনায় মৃতের তালিকা সংশোধন করে বিগত কয়েক মাসে মৃতের সংখ্য়ায় আরও ৪৩২টি মৃত্যু যোগ করা হয়েছে। এরফলেই এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার ২.৬০ শতাংশ। দৈনিক সংক্রমণের হার ৪.১৮ শতাংশ।
এদিকে বুধবার করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও এক আশার কথা শুনিয়েছেন বলরাম ভার্গব। এবার থেকে আরটিপিসিআর পরীক্ষাতেই ধরা পড়বে কোনও ব্যক্তি ওমিক্রনে আক্রান্ত কি না। ওমিক্রন শনাক্ত করার জন্য এই আরটিপিসিআর কিট যৌথভাবে তৈরি করেছে তৈরি করেছে টাটা এমডি এবং আইসিএমআর। সেই টেস্ট কিটের ব্যবহারে ইতিমধ্যেই সবুজ সংকেত দিয়েছে ডিসিজিআই। বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন আইসিএমআরের ডিরেক্টর জেনারেল চিকিৎসক বলরাম ভার্গব।
আরও পড়ুন : Covaxin: কোভ্যাক্সিনের পর প্রয়োজন নেই প্যারাসিটামল, ব্যাথার ওষুধ; বিবৃতি ভারত বায়োটেকের