নয়া দিল্লি: একে তো টানা বৃষ্টি চলছেই, তার উপরে নিম্নচাপের ভ্রুকূটি। আজ, শনিবার ভারী বৃষ্টিতে ভাসতে চলেছে পশ্চিম ও মধ্য ভারত। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নিম্নচাপের প্রভাবেই এই টানা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ধীরে ধীরে এই নিম্নচাপটি দক্ষিণ দিকে সরতে শুরু করবে। দেশের উত্তর, মধ্য ও পূর্ব অংশে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হলেও, বর্ষার প্রবেশের পরও বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রয়েছে দেশের পশ্চিম অংশে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্ষা ঋতুতে মধ্য় পাকিস্তান থেকে শুরু করে ওড়িশা অবধি গাঙ্গেয় উপত্যকা জুড়ে নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়। তবে এবার গাঙ্গেয় উপত্য়কায় অবস্থিত রাজ্যগুলিতে বৃষ্টিপাতের প্রায় ৪০ শতাংশ ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এর মধ্য়ে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড অন্যতম। উল্টোদিকে মধ্য ভারতে আবার অতিবৃষ্টির জেরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জুন মাসে বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৮ শতাংশ। জুলাই মাসে এখনও অবধি ১০ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে, তবে তা চাষের ফলন বাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। পশ্চিমবঙ্গে এখনও অবধি ৫০ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে, ঝাড়খণ্ডে ৫১ শতাংশ। বিহারে ৪৫ শতাংশ ও উত্তর প্রদেশে ৬১ শতাংশ বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রয়েছে। উল্টোদিকে, তেলঙ্গানায় চলতি মরশুমে ১১১ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে, সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছে ৭৯ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। বিদর্ভেও ৪৮ শতাংশ অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে।
একদিকে অতিবৃষ্টি, অন্যদিকে অনাবৃষ্টি- আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনা সম্পর্কে মৌসম বিভাগের বিজ্ঞানী আরকে জেনামানি বলেন, “সামুদ্রিক আবহাওয়া, বাতাসের অবস্থা ও গতিবেগ, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, মেঘের পরিমাণ সহ একাধিক বিষয়ের উপর নির্ভর করেই বৃষ্টিপাত হয়। সাধারণ দেশের দক্ষিণ ভাগ দিয়েই মৌসুমিবায়ু প্রবেশ করে এবং বর্ষা শুরু হয়। এরফলে দেশজুড়েই ভারী বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু উত্তর ভাগ থেকে বাতাস প্রবেশ করে বর্ষার সেই অনুকূল পরিস্থিতিকে নষ্ট করে ফেলে, যার জেরে হিমালয়ের পাদদেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়। এমনকি ব্রহ্মপুত্র নদীতে বন্যারও সৃষ্টি হয়।”