AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Spam Call: ঘনঘন স্প্যাম কল ঢুকছে ২৭ কোটি গ্রাহকের ফোনে! কীভাবে জাল পাতছে স্ক্যামাররা?

Spamming: ইন্টারনেট দুনিয়ায় নজরদারি চালানো ভারতীয় স্টার্ট আপ সংস্থার রিপোর্টে দাবি, একটি বা দুটি জায়গা থেকেই বেহাত হয়ে যায় ব্যক্তিগত তথ্য। একই ভাবে আপনার অনলাইন অ্যাকটিভিটির উপরও নজরদারি চলে সর্বত্র। প্রতি বছরে প্রায় ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ডেটা বিক্রি হয়ে যায়।

Spam Call: ঘনঘন স্প্যাম কল ঢুকছে ২৭ কোটি গ্রাহকের ফোনে! কীভাবে জাল পাতছে স্ক্যামাররা?
প্রতীকী চিত্রImage Credit: Facebook
| Edited By: | Updated on: Nov 10, 2023 | 7:38 AM
Share

নয়া দিল্লি: অফিসে কাজ করছেন বা গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে রয়েছেন? হঠাৎ বারংবার বেজে উঠছে ফোন। রিসিভ করতেই শুনলেন ক্রেডিট কার্ড বা লোনের জন্য ফোন আসছে। নিত্যদিন এই স্প্যাম কলে অতিষ্ঠ হয়ে উঠি আমরা সবাই। কত নম্বর ব্লক করবেন আর! এখন স্প্যাম কলের সঙ্গেই মানিয়ে গুছিয়ে নিয়েছেন সকলে। কিন্তু এই স্প্যাম কলের এই বহুর কত জানেন?

সম্প্রতিই একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে, দেশে প্রতিদিন যত ফোন আসে নাগরিকদের কাছে, তার মধ্যে ২০ শতাংশই স্প্যাম কল। ক্রেডিট কার্ড, ইনসিওরেন্স বা পার্সোনাল লোন – স্প্যাম কলের পরিধি কিন্তু বেড়েই চলেছে। দিনে ১৫০ কোটির বেশি স্প্যাম কল আসে নাগরিকদের কাছে। এই স্প্যাম কলেরও আবার রকমফের রয়েছে। আমাদের ফোন আসা স্প্য়াম কলের মধ্যে ৯০ শতাংশই মার্কেটিং কল।

এছাড়াও নানা ধরনের স্প্যাম কল  ছড়াচ্ছে। যেমন স্প্যাম কলে দেওয়া হচ্ছে চাকরির প্রস্তাব। কোথাও আবার জীবনসঙ্গীর সঙ্গে দেখা করানোর টোপও দেওয়া হচ্ছে। বন্ধুত্ব পাতানোর প্রস্তাব দিয়েও আসছে ঘনঘন ফোন। জানা গিয়েছে,  ২৫ শতাংশ স্প্যাম কলই ভয়েস রেকর্ড করা থাকে। টেলিকম গ্রাহকদের সেই রেকর্ডেড মেসেজই শোনানো হয়।

২০২২সালে স্প্যাম কলের নিরিখে বিশ্বে ৪ নম্বর স্থানে ছিল ভারত। প্রথম স্থানে ছিল ব্রাজিল। এরপর ছিল পেরু ও ইউক্রেন। তারপরই ভারতের নাম। ২০২৩ সালে ইউক্রেনকে ছাপিয়ে তিন নম্বরে উঠে এসেছে ভারত।

ট্রু -কলারের সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতে মোবাইল পিছু মাসে গড়ে ৩৪ স্প্যাম আসে। তবে এই তথ্যের ভিতরেই রয়েছে আসল চমক। ভারতে মোট ১১৪ কোটি ৬৫ লক্ষ মোবাইল গ্রাহক রয়েছে। এদের মধ্যে সফট টার্গেট ২৭ কোটি মানুষ।  দিনে গড়ে ৮টি স্প্যাম কল পান এই ২৭ কোটি গ্রাহক।  ৬৩ শতাংশ মোবাইল গ্রাহক দিনে গড়ে ৩টি স্প্যাম কল পান।

নম্বর ব্লক করে যে এই স্প্যাম কল আটকানো সম্ভব নয়, ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। একটা নম্বর ব্লক করলে নতুন নতুন নম্বর থেকে একই কথা জানিয়ে ফোন আসবে। অবাঞ্চিত এই ধরনের ফোন কল, বিশেষত মার্কেটিং কল আটকাতে বেশ কয়েক বছর আগে ডু-নট- ডিসটার্ব রেজিস্ট্রি চালু করা হয়েছিল। এখনও স্প্যাম কল আটকাতে ভরসা এই ডু নট ডিস্টার্ব রেজিস্ট্রিই। তবে তাতেও স্প্যাম কল আটকানো যাচ্ছে না কেন?

কয়েক মাস আগে এই তিন টেলিকম সংস্থাকে স্প্যাম কল রুখতে আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ভিত্তিক স্প্যাম ফিল্টার (Spam Filter) চালুর নির্দেশ দিয়েছিল ট্রাই। এতেও স্প্যাম কলের দৌরাত্ম্য কমেনি।

টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দেশে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা তেমন জোরদার না হওয়ার কারণেই এই পরিস্থিতি। তথ্য সুরক্ষা জোরদার না হওয়াতেই মোবাইক গ্রাহকদের প্রোফাইল বানিয়ে স্প্যাম কল চালিয়ে যাচ্ছে স্প্যামাররা।

কীভাবে নিশানা বাছা হয়?

মোট চারটি শ্রেণিকেই নিশানা বানায় প্রতারকরা। আপনার আয়, বয়স, ইন্টারনেটে সার্চ হিস্ট্রি ও রোজগার- এই চারটি বিষয়ের উপরে ভিত্তি করেই বিভিন্ন মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি স্প্যাম কল আসে। যেমন আপনার আয় যদি বেশি হয় বা আপনি কোনও কিছু কেনাকাটির জন্য ইন্টারনেটে সার্চ করেন, তবে আপনাকে সম্ভাব্য ক্রেতা ধরে নিয়েই স্প্যাম কল আসতে শুরু করে। এদের মধ্যে যারা কি-প্যাড ফোন বা নেট-বিহীন ফোন ব্যবহার করেন, তাঁরা ডি ক্যাটেগরিতে পড়েন। এদের কাছে সবথেকে কম স্প্যাম কল আসে।

কীভাবে তথ্য পৌঁছাচ্ছে স্ক্যামারদের হাতে?

এর দায় কিন্তু অনেকটাই আমাদের। ইন্টারনেট সার্চিংয়ের সময় অনেক সময়ই ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে ফেলেন গ্রাহকরা। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যক্তিগত তথ্য ভরপুর থাকে। বর্তমানে চাকরি খোঁজার জন্য পেশাদার সাইট থেকেও তথ্য সংগ্রহ করে নেয় স্ক্যামাররা।

ধরুন, আপনি কত টাকা ব্যক্তিগত ঋণ পেতে পারেন, তা অনলাইনে চেক করে দেখলেন। এরপরই আপনার ফোনে পরপর স্প্য়াম কল আসতে শুরু করবে ঋণের নানা আকর্ষণীয় অফার নিয়ে। এরমধ্যে যদি আপনার ঋণের আবেদন নাকচ হয়ে যায়, দেখবেন বাকি সব জায়গা থেকেই ব্যক্তিগত ঋণ নিয়ে ফোন আসা বন্ধ হয়ে যাবে।

ইন্টারনেট দুনিয়ায় নজরদারি চালানো ভারতীয় স্টার্ট আপ সংস্থার রিপোর্টে দাবি, একটি বা দুটি জায়গা থেকেই বেহাত হয়ে যায় ব্যক্তিগত তথ্য। একই ভাবে আপনার অনলাইন অ্যাকটিভিটির উপরও নজরদারি চলে সর্বত্র। প্রতি বছরে প্রায় ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ডেটা বিক্রি হয়ে যায়।

এই ডেটা কিনছে কমবেশি ৫ হাজার টেলি মার্কেটিং কোম্পানি। গ্রাহককে অন্ধকারে রেখেই এই ডেটা বিক্রি হয়। এমনকী, ডেটা শেয়ার না করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, তা পূরণ করছে না কিছু সংস্থা।