নয়া দিল্লি: জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা স্তরের বৈঠকে চিন (China), পাকিস্তান (Pakistan) ও রাশিয়াকে (Russia) আমন্ত্রণ জানাতে চায় ভারত। দিল্লিতে সেই বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। মূলত আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করতেই বসবে সেই বৈঠক। নভেম্বরে সেই বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। ১০ নভেম্বর ও ১১ নভেম্বর, দুটি দিনের মধ্যে যে কোনও একদিন বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নয়াদিল্লির তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মঈদ ইউসুফকে। একদিকে যখন সীমান্তে অস্থিরতা তুঙ্গে, বারবার জঙ্গি অনুপ্রবেশের খবর সামনে আসছে, তখন ভারতের এই উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও দিল্লি মনে করছে, শান্তি স্থাপনে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকার ও নিরাপত্তা, উভয় ক্ষেত্রেই জোর দেওয়া হবে এই বৈঠকে।
এর আগে আগামী ২০ অক্টোবর রাশিয়ার মস্কোতে আয়োজিত মস্কো ফরম্যাট মিটিং-এ যোগ দেবে ভারত। সেখানও আফগানিস্তান নিয়েই পবে আলোচনা।
গত ৩১ অগস্ট তালিবানের সঙ্গে এক টেবিলে বৈঠকে বসেছিল ভারত। কাতারের দোহায় ভারত-তালিবানের মধ্যে বৈঠক হয়। ভারতের পক্ষ থেকে এই বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন রাষ্ট্রদূত দীপক মিত্তল। তালিবানের পক্ষ থেকে নেতা আব্বাস স্তানিকজাইয়ের উপস্থিতি ছিল সেই বৈঠকে। সেখানে ভারতের পক্ষ থেকে তালিবানকে বেশ কয়েকটি কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে খবর। তালিবানই ভারতের সঙ্গে এক টেবিলে বৈঠকে বসতে চেয়েছিল। সেই মতো কাতারের দোহায় এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে ভারতের পক্ষ থেকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানানো হয়, আফগানিস্তানের মাটিতে যেন ভারত-বিরোধী সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ না হয়।
এর আগে ২০১৮ সালে মস্কোতে তালিবানের সঙ্গে ‘বেসরকারি পর্যায়ে’ এক বৈঠকে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত। অবসরপ্রাপ্ত বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক টি সি এ রাঘাবণ এবং অমর সিনহা ওই বৈঠকে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। পাঁচ সদস্যের তালিবান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন শের মহম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই, যিনি বর্তমানে আফগানিস্তানের উপ বিদেশ মন্ত্রী।
আফগানিস্তানে এই অস্থির পরিস্থিতিতে জঙ্গি কার্যকলাপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে রাশিয় ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলি চিন্তিত। আফগান মাটিতে আইসিস জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্তই রাশিয়ার উদ্বেগের প্রধান কারণ। ২০ বছর পর সমগ্র আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর, কাবুলের ক্ষমতায় আসীন হয়েছে তালিবান। কাবুলের ক্ষমতাভার নিজেদের হাতে তুলে নেওয়ার পর থেকেই চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে আফগান মহিলারা। আগের তালিবানি শাসনে নারীর অধিকার খর্ব করার যে মারত্মক অভিযোগ ছিল সেইসব দিনই পুণরায় ফিরতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। একদিকে যেমন সীমান্তের অশান্ত নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে মানবাধিকার নিয়েও তৈরি হয়েছে সঙ্কট।
আরও পড়ুন: Power Demand: কয়লা সঙ্কটের মাঝেই দেশে বাড়ল বিদ্যুতের চাহিদা, ক্রমশ বাড়ছে ‘পাওয়ার কাট’