হায়দরাবাদ: তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির প্রধান চন্দ্রশেখর রাওকে ছেড়ে কথা বলল না বিজেপি। হায়দরাবাদের বেগমপেট বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রোটোকল এড়িয়ে যাওয়ার জন্য, তাঁকে তীব্র আক্রমণ করল গেরুয়া শিবির। হায়দরাবাদে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে দুই দিন ব্যাপী বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। সেই বৈঠকে যোগ দিতেই এদিন হায়দরাবাদ সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমানবন্দরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত না জানালেও, বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে দুই হাত বাড়িয়ে গ্রহণ করেছেন রাও। শনিবার বিকেলে এই বিষয়ে মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট বিজেপি নেত্রী স্মৃতি ইরানি। তাঁর মতে, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর, ব্যক্তি নরেন্দ্র মোদীকে অপমান করেননি, করেছেন প্রধানমন্ত্রীর পদকেই।
শনিবার হায়দরাবাদ বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রোটোকল মেনে উপস্থিত হননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর। বদলে মন্ত্রিসভার এক সদস্যকে পাঠিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আসার কয়েক ঘন্টা আগেই বেগমপেট বিমানবন্দরে পা রাখেন যশবন্ত সিনহা। বিরোধীদের মনোনীত রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে স্বাগত জানাতে কিন্তু, সপারিষদ উপস্থিত ছিলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। এই বিসদৃশ ঘটনা নিয়েই কেসিআর-কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন স্মৃতি ইরানি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (কেসিআর) শুধু প্রধানমন্ত্রীকে নয় সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানকে (প্রধানমন্ত্রী পদের মতো প্রতিষ্ঠানকে) অপমান করেছেন। সংবিধানের অখণ্ডতাকে বিপন্ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী কিন্তু সবাইকে উন্মুক্ত বাহুতে গ্রহণ করেছেন।’
শুধু কেসিআর নন, স্মৃতির নিশানা থেকে বাদ যাননি কেটিআর, অর্থাৎ, কেটি রামা রাও-ও। বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী সভাকে ‘সার্কাস’ বলেছিলেন টিআরএস দলের কার্যকরী সভাপতি। জবাবে এদিন কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘কেটিআর-এর জন্য, জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক হাসি-ঠাট্টার বিষয় হতে পারে। কিন্তু, বিজেপির জন্য এই বৈঠক বিভিন্ন রাজ্যের কর্মীদের সম্মান জানানোর সুযোগ। কেউ ভাঁড়সুলভ রাজনৈতিক আচরণ করতেই পারেন। তাঁরা তাঁদের জাতীয় কর্মসমিতিকে গুরুত্ব নাও দিতে পারেন। কিন্তু, আমাদের জন্য এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কারণ, এই সভায় আমরা যেমন কর্মীদের শ্রদ্ধা জানাই, তেমনই আমরা দেশের জন্য কাজ করার অঙ্গীকারও গ্রহণ করি।’
তবে শুধু স্মৃতি ইরানি নন, হায়দরাবাদের বেগমপেট বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রোটোকল এড়িয়ে যাওয়ার জন্য, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে আক্রমণ করেছেন আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানও। টুইটারে টিআরএস প্রধানের নিন্দা করে তিনি লিখেছেন, ‘অক্ষরে এবং চেতনায় সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো হল আমাদের গণতন্ত্রের ভিত্তি। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী আবারও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রোটোকল লঙ্ঘন করে, মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী উভয় পদকেই অপমান করলেন। কেসিআর লুকিয়ে থাকতে পারেন কিন্তু তাঁর দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি লুকিয়ে থাকবে না।’