জম্মু: প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই উত্তপ্ত হয়েছে উপত্যকা। পরপর দু’দিন জঙ্গি দমন অভিযান ও নিরাপত্তা বাহিনীর উপর জঙ্গিদের হামলার জেরে উপত্যকায় ঝরেছে রক্ত। শনিবারই কুলগাম (Kulgam) এলাকায় সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে নিকেশ করা হয়েছে দুই জঙ্গিকে। এর আগে শুক্রবারও সুজওয়ানে সিআইএসএফ (CISF) জওয়ানদের বাসে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এরপরই সেনা-জঙ্গিদের মধ্যে গুলির লড়াই শুরু হয়। সংঘর্ষে এক জওয়ান শহিদ হন, নিকেশ করা হয় দুই জঙ্গিকে। একের পর এক এই ধরনের জঙ্গি হামলার ঘটনার পরই শনিবার রাতে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের (Jammu Kashmir Police) তরফে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)-র সফরে বিঘ্ন ঘটাতেই আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। শুক্রবারের আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় সাহায্যকারী দুই ব্যক্তিকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ, রবিবার জম্মু-কাশ্মীর সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০১৯ সালের অগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর এই প্রথম উপত্যকা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি জাতীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবস উপলক্ষ্যে পাল্লি গ্রামে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। এছাড়াও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করবেন।
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যে ব্যক্তি জঙ্গিদের ট্রাকে করে নিয়ে এসেছিলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া অপর ব্যক্তি, যিনি জঙ্গিদের আশ্রয় দিয়েছিলেন, তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল মুকেশ সিং জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফর ও জনসভায় যাতে অশান্তির আগুন ছড়ানো যায়, তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছে জঙ্গিরা। তিনি জানান, জম্মুতে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা, কিন্তু গতকালের এনকাউন্টারেই তাদের নিকেশ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, দুইজন আত্মঘাতী হামলাকারী সম্প্রতিই পাকিস্তান থেকে সাম্বা সীমান্ত পার করে ভারতে ঢুকেছিল। সেখান থেকে তাদের ট্রাকে করে সুজওয়ানে নিয়ে আসা হয়। এলাকারই স্থানীয় বাসিন্দা শফিক আহমেদ শেখ নামক এক ব্যক্তির বাড়িতে তাদের আশ্রয় নেওয়ার কথা ছিল। সেখান থেকেই হামলা চালানো হত। তবে শফিকের বাড়ি পৌঁছনোর আগেই উপত্যকায় জঙ্গি উপস্থিতির খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের নিকেশ করে।
শুক্রবার সকালেই সিআইওসএফ জওয়ানদের বাসে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ইতিমধ্যেই সেই হামলার সিসিটিভি ফুটেজও সামনে এসেছে। সেদিনের হামলায় এক সিআইএসএফ জওয়ান মারা যান এবং আহত হন আরও চার জওয়ান। এরপরই সেনার সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষে শুরু হয়। গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারায় দুই জঙ্গি। তারা জইশ-ই-মহম্মদ গোষ্ঠীর সদস্য ছিল বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ।