নয়া দিল্লি : তবে কি সত্যিই কংগ্রেসের হাত ধরছেন কানহাইয়া কুমার? রাজধানীর রাজনীতির আনাচে কানাচে এখন এই প্রশ্নটাই ঘোরাফেরা করছে। আর সেই জল্পনা আজ আরও উস্কে দিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহেই গান্ধী পরিবারের হাত ধরতে চলেছেন কানহাইয়া। সব কিছু ঠিক থাকলে ২৮ সেপ্টেম্বরই কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন বাম রাজনীতির তরুণ ব্রিগেডের সবথেকে বড় মুখ।
কানাঘুষো অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। বিশেষ করে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই নাকি কানহাইয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেসের হাত ধরতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে এতদিন ধরে তা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এখন সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে। কিছুদিন আগে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখাও করেছেন কানহাইয়া। আর তারপর থেকেই জল্পনা আরও কয়েক গুনে বেড়ে গিয়েছে।
প্রথমে শোনা যাচ্ছিল, ২ অক্টোবর, গান্ধী জয়ন্তীর দিনে কংগ্রেসের হাত ধরতে চলেছেন সিপিআইয়ের এই তরুণ তুর্কি। কিন্তু আর বেশি দেরি করতে চাইছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। তাই চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে কানহাইয়াকে দলে টেনে নিতে চাইছেন সোনিয়া – রাহুল – প্রিয়ঙ্কারা। কংগ্রেসের অন্দরে কান পাতলেই এই নিয়ে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে।
শুধু কানহাইয়াই নয়, ২৮ সেপ্টেম্বর জিগনেশ মেওয়ানিও কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। কানহাইয়ার মতোই বিভিন্ন সময়ে একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে জিগনেশকে। দেশের তরুণ রাজনীতিকদের নাম উঠলে, কানহাইয়া এবং জিগনেশ দু’জনের নামই প্রথম সারিতে থাকবে। জিগনেশ এখন গুজরাটের বিধায়ক। নির্দল বিধায়ক। রাষ্ট্রীয় দলিত অধিকার মঞ্চের আহ্বায়ক।
বিগত দুই বছর ধরে একদিকে যেখানে একের পর এক যুবনেতা কংগ্রেস ছেড়েছেন, সেখানেই কানহাইয়া কুমারের কংগ্রেসে যোগ দিলে, তাঁর জ্বালাময়ী বক্তৃতার মাধ্যমে যুব সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছে যেতে চাইছে কংগ্রেস। অন্যদিকে, সিপিআই সূত্রে খবর, দলে মানিয়ে নিতে পারছেন না কানহাইয়া কুমার। সেখানে নাকি তাঁর “দমবন্ধ” হয়ে আসছে। সেই কারণেই তিনি দল বদলের চিন্তা ভাবনা করছেন।
এ দিকে, কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, কানহাইয়া যদি কংগ্রেসে যোগ দেন, তবে বিহারের রাজনীতিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। বিগত তিন দশক ধরে বিহারে ক্রমশই কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা কমেছে, এমনকি গত বছর বিধানসভা নির্বাচনেও আরজেডি ও সিপিআই(এমএল)-র সঙ্গে জোট বেঁধে ৭০টি আসনে লড়েছিল কংগ্রেস। মাত্র ১৯টি আসনে জিততে পেরেছিল তারা। এক্ষেত্রে বিহারের ভূমিপুত্র, বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা কানহাইয়া কংগ্রেসের পালে হাওয়া আনতে পারে।
তবে একা কানহাইয়া কুমারই নয়, মোদী রাজ্যেও থাবা বসাতে চাইছে কংগ্রেস। গুজরাটের ভাদগামের বিধায়ক জিগনেশ মেওয়ানির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে কংগ্রেস। গত বিধানসভা নির্বাচনেই নির্দল প্রার্থী তথা পাতিদার সম্প্রদায়ের নেতা জিগনেশের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। সেই সময়ই কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার জল্পনা শুরু হয়েছিল। চলতি মাসেই তিনি কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন : দলে ‘দমবন্ধ’ হয়ে আসছে কানহাইয়ার! রাহুলের সঙ্গে সাক্ষাতেই উসকে দিল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার জল্পনা