তিরুবনন্তপুরম: কেন্দ্র এখনও কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে নারাজ। এদিকে বৃহস্পতিবার কেরল বিধানসভায় (Kerala assembly) একদিনের বিশেষ অধিবেশনে সর্বসম্মতিতেই পাশ করা হল তিনটি কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাবনা (Resolution against farm laws)। আশ্চর্যকর বিষয় হল, এই প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে বিধানসভায় বিজেপি (BJP)-র একক সদস্যও রা কাটেননি। প্রস্তাবনা পাশ করার পর মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন (Pinarayi Vijayan) বলেন,”দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চললে তার প্রভাব পড়বে রাজ্যেও। কৃষিপণ্য আসা বন্ধ হয়ে গেলে দুর্ভক্ষের সৃষ্টি হবে। তা হতে দেওয়া যাবে না, তাই এই সিদ্ধান্ত।”
বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডাকা নিয়ে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল কেরল সরকারকে। রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গেও সঙ্ঘাত বাধে অধিবেশনের আর্জি নামঞ্জুর করায়। তবে শেষপর্যন্ত রাজ্যপালের সম্মতি মেলায় আজ অধিবেশন বসানো হয়।
তবে প্রস্তাবনা পাশ করাতে কষ্ট করতে হয়নি সরকারকে। বিরোধী দল কংগ্রেস (Congress)-ও এই প্রস্তাবনায় সম্মতি জানায়। বিজেপির তরফে বিরোধীতা আশা করা হলেও বিধানসভার একক বিজেপি সদস্য রাজাগোপাল (Rajagopal)ও প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। তিনি বলেন, “আমি ভোট করিনি, তবে এই প্রস্তাবনাকে সমর্থন করি।”
প্রস্তাবনা পাশ হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে তোপ দেগে বলেন, “এমন একটি ব্যবস্থাপনা থাকা উচিত, যাতে কেন্দ্র কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনবে এবং নায্যদামে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেবে। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। সরকার বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কৃষিক্ষেত্রে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিচ্ছে, নূন্যতম সহায়ক মূল্য দেওয়া দায়িত্বও ঝেড়ে ফেলতে চাইছে সরকার।”
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যের ভবিষ্যৎ ও ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য-উভয় নিয়েই চিন্তা করে ভারত: প্রধানমন্ত্রী
কৃষক আন্দোলনকে ঐতিহাসিক অ্যাখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সহায়ক মূল্য নিয়ে তিনি চিন্তিত। এতে কৃষকদের দরদামের ক্ষমতা কমিয়ে করপোরেটদের ক্ষমতাই বৃদ্ধি হচ্ছে। তিনি বলেন, “এই সমস্ত বিষয়ে চিন্তাভাবনা করেই কেরল বিধানসভা কেন্দ্রের কাছে তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহার করে কৃষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছে।”
কংগ্রেস নেতা কেসি জোসেফ (KC Joseph)-ও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কেবল টিভিতে কথা বলেন ও কৃষকদের প্রতিশ্রুতি দেন। ওনার উচিত ছিল কৃষকদের ফোন করে কথা বলা। আমি কৃষকদের স্যালুট করি।”
পঞ্জাবের মতো কেরলেও কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাবনা পাশ হলেও সাংবিধানিক কিছু জটিলতা এখনও রয়েছে। কারণ রাষ্ট্রপতির সিলমোহর ছাড়া বিধানসভায় পাশ কোনও প্রস্তাবনাই কার্যকর হতে পারে না।
আরও পড়ুন: বর্ষশেষেও পিছু ছাড়ল না করোনা, নতুন স্ট্রেনে আক্রান্ত আরও ৫, বৃদ্ধি দৈনিক সংক্রমণেও