নয়া দিল্লি: জমি দুর্নীতি মামলায় এবার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামীজিকে তলব ইডি-র। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের জমি কিনেছিলেন অনুব্রত। প্রশ্ন উঠছে, নেপথ্যে কি সেই প্রভাবশালী তত্ত্ব? সেই নিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করতে এবার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামীজিকে তলব করল ইডি। মঙ্গলবারই ইডি-র দিল্লি সদর দফতরে হাজিরা দিয়েছেন স্বামীজি। গেরুয়া বসনেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে ঢোকেন তিনি। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি দফতরে পৌঁছন। বীরভূম তৃৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জমি দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কখনও বৃদ্ধাশ্রম হয়ে যায় রিসর্ট, কখনও আবার আদিবাসীদের জমিও রীতিমতো লুঠ হয়ে যায়। ছাড় যায় না ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘও। অনুব্রতর দুর্নীতিতে এই নয়া সংযোজন নিয়ে রীতিমতো চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তদন্তকারীদের।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার স্ক্যানারে ছিল সুরুলের ১.৪ একর জমি। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের এই জমির কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার -এর হাতে জোরাল তথ্য এসেছে। তদন্তকারীদের হাতে তথ্য রয়েছে, বাজার দরের চার ভাগের একভাগ টাকায় জমিটি হস্তগত করেছে অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যার কোম্পানি। তথ্য তালাশে জানা গিয়েছে, এই ১.৪ একর জমির মালিক ছিলেন সুচিন্ত্যকুমার চট্টোপাধ্যায় নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। বাবা মায়ের স্মৃতিতে একটি প্রযুক্তিবিদ্যার প্রতিষ্ঠান বানানোর জন্য এই জমি তিনি দান করেছিলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে।
সুরুলের এই জমি বিক্রি করে সেই টাকায় নাকি মুলুকে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ক্যাম্পাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এখানেই প্রশ্ন। সিদ্ধান্ত নাকি কেষ্টর কারসাজি? কারণ তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, স্থানীয় কয়েকজন যুবক ও এক আইনজীবী এই জমি বিক্রি নিয়ে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ কর্তৃপক্ষর সঙ্গে যোগাযোগ করে। অনুব্রতর মেয়েকে সেই জমি বিক্রি করতে বলা হয়। নথি অনুযায়ী ২০২১ সালে ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। ১৫টি কিস্তিতে জমির দাম মেটায় অনুব্রত কন্যার কোম্পানি। আগে সেবাশ্রমের মহারাজ এই সংক্রান্ত যে কোনও প্রশ্নের উত্তর এড়িয়েছেন। তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এবার সেই উত্তরই পেতে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামীজিকে তলব করেছে ইডি। কীভাবে ওই জমি হস্তান্তরিত হয়েছে, তারই তথ্যতালাশে তদন্তকারীরা।