নয়া দিল্লি: আবারও এক নক্ষত্র পতন! প্রয়াত হলেন নৃত্য়শিল্পী বিরজু মহারাজ(Birju Maharaj)। কত্থক নৃত্যে (Kathak Dance) তাঁকে হার মানানো ছিল অসম্ভব। রবিবার গভীর রাতে নয়া দিল্লির বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি হৃদরোগে (Heart Attack) আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩।
দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান পদ্ম বিভূষণের সম্মানিত করা হয়েছিল প্রবীণ কত্থক শিল্পীকে। বিশ্বমঞ্চে ভারতকে নয়া পরিচিতি এনে দিয়েছিলেন তিনি। নাচের অসাধারণ মুদ্রা, চোখের জাদুতেই তিনি গোটা বিশ্বকে মুগ্ধ করেছিলেন। তাঁর অনুগামী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তিনি পণ্ডিতজী বা মহারাজজী হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। নাচের পাশাপাশি তাঁর কঠোর নিয়মাবর্তিতাও তাঁকে আলাদা পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
সূত্রের খবর, রবিবার রাতে বিরজু মহারাজ তাঁর নাতির সঙ্গে খেলছিলেন। সেই সময়ই হঠাৎ তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে, সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই তাঁর কিডনিতে সমস্যা ধরা পড়ে। এরপর থেকেই ডায়ালেসিস চলছিল।
কেবল বিরজু মহারাজই নন, তার পরিবারের বাকি সদস্যরাও কত্থক নৃত্যের প্রবাদপ্রতীম শিল্পী ছিলেন। মহারাজ পরিবারের বাকি দুই সদস্য, তাঁর দুই কাকা শম্ভু মহারাজ ও লচ্চু মহারাজও বিখ্যাত কত্থক শিল্পী ছিলেন। তাঁর বাবা গুরু আচ্চান মহারাজও কত্থক নৃত্যকে এক নয়া শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন।
শুধু কত্থক নৃত্যই নয়, অসাধারণ বাদ্য বাজাতে পারতেন বিরজু মহারাজ। তিনি প্রায় সবধরনেরই বাদ্য বাজাতে পারতেন, তবলা ও নালে তিনি বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। একইসঙ্গে অসাধারণ গানও গাইতেন তিনি। ঠুংরি, দাদরা, ভজন ও গজল গাইতে পারদর্শী ছিলেন তিনি।
বিরজু মহারাজের নাচের মাধ্যমে অসাধারণ গল্প বলার ক্ষমতাই তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা পরিচয় তৈরি করে দিয়েছিল। বাস্তব জীবনের টুকরো টুকরো ঘটনা তিনি যেভাবে ফুটিয়ে তুলতেন, তা মুগ্ধ করত দর্শক। সমস্ত ঘটনাকে খুটিয়ে দেখার গুণের কারণেই ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন, মজার ছলে তাঁর ছোট ছোট ঘটনার অসাধারণ ব্যাখ্যা শুনে আশ্চর্য হতেন সকলে।
বিরজু মহারাজের মৃত্যুর খবর পেতেই শোকের ছায়া নেমেছে শিল্পী মহলে। এদিন সকালেই গায়ক আদনান শামি টুইট করে লেখেন, “প্রবাদপ্রতীম কত্থক শিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজজীর প্রয়াণের খবরে অত্যন্ত দুঃখিত। শিল্পজগতে এক অতুলনীয় প্রতিষ্ঠানকে হারালাম আমরা, উনি নিজের প্রতিভার মাধ্যমে একাধিক প্রজন্মকে প্রভাবিত করেছিলেন। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।”
চিত্র পরিচালক অশোক পণ্ডিতও টুইট করে বলেন যে, ভারত এক রত্নকে হারাল। তিনি টুইটে লেখেন, “কত্থক শিল্পী তথা গায়ক পদ্মবিভূষণ পণ্ডিত বিরজু মহারাজজী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন। ওনার পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।”
আরও পড়ুন: Shaoli Mitra: ‘সামান্য ভাবে সাধারণের অগোচরে’ শেষকৃত্য চেয়েছিলেন শাঁওলি, চাননি ফুলভার, আসুরিক চিকিৎসা