AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Shaoli Mitra: ‘সামান্য ভাবে সাধারণের অগোচরে’ শেষকৃত্য চেয়েছিলেন শাঁওলি, চাননি ফুলভার, আসুরিক চিকিৎসা

২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি। সেই একই ছবি। তবে চরিত্রগুলো আলাদা। বাবার জায়গা দখল করলেন মেয়ে। আর মেয়ের জায়গায় মানস কন্যা অর্পিতা। রবিবার দুপুরে আপনি যখন ভাতঘুমে মজেছেন তখন নিঃশব্দেই অনাড়ম্বর যাত্রা হল মানুষটির।

Shaoli Mitra: 'সামান্য ভাবে সাধারণের অগোচরে' শেষকৃত্য চেয়েছিলেন শাঁওলি, চাননি ফুলভার, আসুরিক চিকিৎসা
গ্রাফিক্স- উৎসা হাজরা।
| Edited By: | Updated on: Jan 17, 2022 | 2:45 AM
Share

১৯৯৭ সালের ১৯ মে। ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত দুটো বেজে ১৫ মিনিট। প্রয়াত হলেন শম্ভু মিত্র। মিডিয়ার ভিড়, ভক্তদের হাহাকার, সাদা ফুলের চেনা ছবির বদলে দেখা গিয়েছিল এক অন্য চিত্র। তাঁর নিথর দেহ নিয়ে গাড়ি ছুটেছিল সিরিটির শ্মশানে। শ্মশানের ভারপ্রাপ্ত কর্মচারীটি শ্মশানযাত্রীদের দেখে এবং মৃত মানুষটির নাম জেনে প্রশ্ন করেছিলেন, “ইনি কি সেই শম্ভু মিত্র? যিনি নাটক করেন?” উত্তর পাননি। পাওয়ার কথা নয়। কারণ, শেষ ইচ্ছেয় শম্ভু মিত্র জানিয়েছিলেন তাঁর মনের কথা… “আমি সামান্য মানুষ, জীবনে অনেক জিনিস এড়িয়ে চলেছি। তাই মরবার পরেও আমার দেহটা যেন তেমনি নীরবে, একটু ভদ্রতার সঙ্গে, সামান্য বেশে, বেশ একটু নির্লিপ্তির সঙ্গে পুড়ে যেতে পারে।” মেয়ে শাঁওলি সেদিন কথা রেখেছিলেন। দাহ করে ফিরে এসে বাবার মৃত্যুসংবাদ জানিয়েছিলেন সক্কলকে।

২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি। সেই একই ছবি। তবে চরিত্রগুলো আলাদা। বাবার জায়গা দখল করলেন মেয়ে। আর মেয়ের জায়গায় মানস কন্যা অর্পিতা। রবিবার দুপুরে আপনি যখন ভাতঘুমে মজেছেন তখন নিঃশব্দেই অনাড়ম্বর যাত্রা হল মানুষটির। এমনটাই তো চেয়েছিলেন তিনি। নোটারি করে ইচ্ছাপত্রে জানিয়ে গিয়েছিলেন সে কথা। নশ্বর দেহ নিয়ে অযথা হইচই, মালার রাশি, শোকজ্ঞাপন কিছুই তিনি চাননি। ঠিক যেমন চাননি কোনও প্রকার আসুরিক চিকিৎসা।

তাঁর ইচ্ছাপত্র এখন সোশ্যাল মিডিয়ার ইতিউতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। নেটিজেনদের প্রশ্ন, মৃত্যুধ্বনি কি শুনতে পারছিলেন তিনি? লিখেছিলেন, “আমার একান্ত ইচ্ছে আমার পিতাকে অনুসরণ করেই। মৃত্যুর পর যত দ্রুত সম্ভব আমার সৎকার সম্পন্ন করা হয়। ওই শরীরটিকে প্রদর্শন করায় আমার নিতান্ত সংকোচ। ফুলভারের কোনও প্রয়োজন নেই। সামান্য ভাবে সাধারণের অগোচরে যেন শেষকৃত্যটি সম্পন্ন হয়।” তাই হয়েছে। ৩টে ৪০-র মৃত্যুর খবর জনতার কাছে পৌঁছেছে রাত বাড়লে। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘনিষ্ঠ মহলই অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেছে, “অসুস্থ ছিলেন? কই জানতাম না তো?” মৃত্যু কীভাবে হবে বা স্বেচ্ছা মৃত্যুর অধিকার ভারতীয় আইন দেয়নি, কিন্তু শেষ যাত্রা কেমন হবে তা ঠিক করার অধিকার সবার আছে। বাবা পথ দেখিয়েছিলেন, মেয়েও হাঁটলেন সেই পথেই। রেখে গেলেন একাঙ্ক নাটক, সৃষ্টি, কৃষ্টি আর স্মৃতি। বাবা-মেয়ের ওপারে দেখা হল কি?

আরও পড়ুন:Shaoli Mitra: বাবার মতোই নিভৃতে চলে যাওয়ার ‘ইচ্ছাপত্র’ লিখে মৃত্যু, প্রয়াত শাঁওলি মিত্র