গরু পাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) গ্রেফতার কেষ্ট-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal)। বুধবার দিল্লিতে ইডির (Enforcement Directorate) সদর দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল সুকন্যাকে। বেশ কিছু বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা তাঁর থেকে কোনও সদুত্তর পাননি। শেষ পর্যন্ত সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রথম ব্য়াটার হিসেবে আইপিএলে ৭ হাজার রানের মাইলফলকের সামনে বিরাট কোহলি। লখনউয়ের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্য়াচে নামছে রয়্যাল চ্য়ালেঞ্জার্স ব্য়াঙ্গালোর। জয়ে ফিরতে মরিয়া আরসিবি। ব্য়ক্তিগত মাইলফলকে পৌঁছতে আর ৪৩ রান প্রয়োজন বিরাটের। লাইভ আপডেটের জন্য নজর রাখুন TV9Bangla Sports-এর এই লিঙ্কে।
দিল্লির রাউস এভিনিউ কোর্টে বৃহস্পতিবার সুকন্যা মণ্ডলকে পেশ করা হলে ইডির তরফে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। উল্টোদিকে সুকন্যার আইনজীবী পুলিশি হেফাজতের বিরোধিতা করেন। দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক সুকন্যাকে তিনদিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সকালে আরও একদফা স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানো হয়েছে অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। দুপুর তিনটে নাগাদ দিল্লির রাউস এভিনিউ কোর্টে নিয়ে আসা হল কেষ্টকন্যাকে।
সুকন্যা মণ্ডলের গ্রেফতারিতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর বান্ধবী সুতপা। গতকাল রাতে কেষ্টকন্যাকে জামা-কাপড় পৌঁছে দিতে যান তিনি। কাঁদতে-কাঁদতে বারবার তিনি বলছেন, “আমায়ও গ্রেফতার করুন, তাহলে অন্তত একসঙ্গে থাকতে পারব।” সুতপার দাবি, এতদিন ধরে তাঁর চিকিৎসার খরচ যোগাতেন অনুব্রত ও সুকন্যা। দীর্ঘদিনের সঙ্গী গ্রেফতার হওয়ায় চোখের জল বাধ মানছে না সুতপা পালের।”
বুধবার গোটা রাত ইডি অফিসেই কাটিয়েছে অনুব্রত কন্যা। গ্রেফতারির পর কেটেছে গোয়েন্দাদের অফিসেই সুকন্যা মণ্ডল কাটিয়েছেন তাঁর প্রথম রাত। গতকাল রাত সাড়ে আটটা নাগাদ নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লির আরএমএল হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। সেখান থেকে রাত প্রায় ন’টা নাগাদ আবার প্রবর্তন ভবনে ইডির অফিসে নিয়ে আসা হয় সুকন্যাকে। ইডি সূত্রের খবর, রাত্রিবেলা ডিনারে তাঁকে রুটি,সবজি ও স্যুপ খেতে দেওয়া হয়েছে।
বিস্তারিত পড়ুন: Sukanya Mondal Arrest: রুটি-স্যুপ দিয়ে রাতের ডিনার, ED অফিসে কেমন কাটল সুকন্যার প্রথম রাত?
সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় সুকন্যাকে। তারপর সাড়ে আটটা নাগাদ নিয়ে যাওয়া হল দিল্লির আরএমএল হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। সেখান থেকে রাত প্রায় ন’ টা নাগাদ আবার প্রবর্তন ভবনে ইডির অফিসে নিয়ে আসা হয় সুকন্যাকে। জানা যাচ্ছে, আগামিকাল রাউজ এভিনিউ কোর্টে তাঁকে পেশ করা হবে।
দুটি কোম্পানির ডিরেক্টর পদে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। একটি সংস্থা, নীর ডেভলপার এবং অন্য একটি সংস্থা এএনএম অ্যাগ্রোকেম। এই এএনএম অ্যাগ্রোকেমের অধীনে রয়েছে ভোলে ব্যোম রাইস মিল। এর পাশাপাশি বোলপুরের মকরমপুরে দুটি প্লট রয়েছে সুকন্যার নামে। বল্লভপুরেও রয়েছে চারটি প্লট। কালিকাপুর ও গয়েশপুর মিলিয়ে সুকন্যার নামে ২৮টি জমির নথির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। নিউটাউনেও দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে সুকন্যার নামে।
গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে যে ৩৫ পৃষ্ঠার চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই, তাতে দেখা গিয়েছিল সুকন্যার সম্পত্তিও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। প্রাথমিক শিক্ষিকা সুকন্যার ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে বার্ষিক আয় ছিল ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। পরের বছর তা বেড়ে হয়েছিল সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা। তার পরের বছর ১০ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। কিন্তু ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে যেন অনুব্রতর মেয়ের বার্ষিক আয় লং জাম্প দিয়েছিল। বেড়ে হয় ৪৯ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। তার পরের বছর আয় আরও ২ লক্ষ টাকা বাড়ে। ২০১৮-১৯ সালে ফের লং জাম্প। ওই বছর আয়কর রিটার্নে সুকন্যা তাঁর আয় দেখিয়েছিলেন ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। ১৯-২০ সালে তাঁর আয় ছিল প্রায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। আর ২০-২১-এ তাঁর আয় হয়েছে ৯২ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। তবে এই হিসেবের সবই ছিল তাঁর ব্যক্তিগত আয়। তাঁর নামে থাকা চালকল বা সংস্থাগুলির আয়ের হিসাব আলাদা। এছাড়া তাঁর নামে ৩ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটও রয়েছে।
সুকন্যার গ্রেফতারি নিয়ে কুণাল বলেন, “অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ের গ্রেফতারির বিষয় আইনের ব্যাপার। আইন আইনের পথে চলবে। যদি কেউ বা কারা দোষ করে থাকেন, তাঁরা শাস্তি পাবেন। তৃণমূল কংগ্রেস কারও ঢাল হয়ে দাঁড়াবে না। কিন্তু, নির্দিষ্ট ভাবে এই ক্ষেত্রে একটা বিষয় বলা যায়। ওঁর মা মারা গিয়েছেন। বাবা জেলে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে কি বাইরে রেখে তদন্ত করা যেতে পারত না?”
ঠিক কী কী কারণে এদিন গ্রেফতার করা হল কেষ্ট-কন্যাকে? ইডি সূত্রে খবর, সুকন্যাকে গ্রেফতার করার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, গরু পাচার মামলার তদন্তে অসহযোগিতা করা, তদন্তের কাজে বিভ্রান্তি তৈরি করা এবং তদন্তকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করেছেন সুকন্যা। সূত্র মারফত এমনই জানা যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এর আগেও একাধিকবার কেষ্টকন্যাকে দিল্লিতে ইডির অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, সেই সময় গরহাজিরার যে কারণ তদন্তকারীদের কাছে উল্লেখ করা হয়েছে, সেই কারণও সঠিক বা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
এর আগে বেশ কয়েকবার ইডির হাজিরা এড়িয়েছেন সুকন্যা মণ্ডল। শেষবার হাজিরার দিন ছিল ১৩ এপ্রিল। কিন্তু সেদিনও হাজিরা দেননি তিনি। আইনজীবী মারফত সুকন্যা ইডিকে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। পরপর তিনবার ইডির হাজিরা এড়ানোর পর থেকেই বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, তাহলে কি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবার কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে? শেষ পর্যন্ত বুধবার দিল্লির প্রবর্তন ভবনে ইডির অফিসে যান সুকন্যা মণ্ডল। সূত্রের খবর, এদিন ইডির তরফে যে সব প্রশ্ন সুকন্যাকে করা হয়েছিল, সেই সব প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কেষ্ট কন্যা। শেষ পর্যন্ত এদিন সন্ধেয় ইডি তাঁকে গ্রেফতার করে।