চণ্ডীগঢ়: আইনজীবীদের ধর্মঘট চলাকালীনই বৃহস্পতিবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল লুধিয়ানা জেলা আদালত চত্বর (Ludhiana Court Blast)। কী থেকে বিস্ফোরণ হয়েছিল এবং এর পিছনে বড় কোনও জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে কিনা, তা জানতে পঞ্জাব পুলিশ(Punjab Police)-র পাশাপাশি এনএসজি (NSG) ও এনআইএ(NIA)-ও তদন্তভার গ্রহণ করেছে। বিস্ফোরণের একদিন পর প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণে মৃত যে ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁর পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে এবং মনে করা হচ্ছে তিনিই এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন। আরও আশ্চর্যের বিষয় হল, ওই ব্যক্তি একজন প্রাক্তন পুলিশ অফিসার।
সূত্রের খবর, মৃত ওই ব্যক্তির নাম গগনদীপ সিং। তিনি প্রাক্তন পুলিশকর্মী। তিনি হেড কন্সটেবল ছিলেন, কিন্তু ২০১৯ সালে তাঁকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়। মাদক পাচার কাণ্ডে তাঁর মদত প্রমাণিত হওয়ায়, দুই বছরের জন্য জেলেও পাঠানো হয় তাঁকে। চলতি বঠরের সেপ্টেম্বর মাসেই তিনি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, মৃত ওই ব্যক্তির সিম কার্ড ও ওয়্যারলেস ডঙ্গলের মাধ্যমেই পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে এবং পরে পরিবারের সদস্যরাও শনাক্তকরণ করেছেন। বৃহস্পতিবার আরডিএক্সের মাধ্যমেই আদালত চত্বরে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এই হামলার পিছনে সন্ত্রাসবাদী যোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না খলিস্তানি যোগও।
এদিকে, জঙ্গি যোগের বিষয়টি উঠে আসতেই তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নি। আগেরদিনই তিনি পাকিস্তানি বা খলিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন, উল্টে মাদক পাচার চক্র, যেখানে পঞ্জাবের প্রাক্তন মন্ত্রী বিক্রম মাজিথিয়ার নাম জড়িয়েছে, তার সঙ্গে এই বিস্ফোরণের যোগ থাকতে পারে বলে দাবি করেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, “দুটি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মোহালিতে যখন মাজিথিয়ার মামলার শুনানি চলছিল, সেইসময়ই লুধিয়ানার আদালতে বিস্ফোরণ হল। দুই ঘটনার মধ্যো যোগসূত্র রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে”। চন্নির এই মন্তব্যের পরই পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিরোধী নেতারা তাঁর তুমুল সমালোচনা করেন।
নির্বাচনের মুখে পঞ্জাবের এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন কেন্দ্রও। শুক্রবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার পঞ্জাবের পরিস্থিতিকে দেশের অভ্যন্তরে বা বাইরের কোনও শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হতে দেবে না। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে এমন অনেক কিছুই ঘটছে। এর পিছনে কোনও শয়তানি শক্তি কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। এদের উদ্দেশ্য একটাই, বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খলা ছড়ানো।”
পঞ্জাবের পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বিশেষ বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরণ রিজিজুও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি বলেন, “রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।”